জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ এপ্রিল চার দিনের সফরে জাপান যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারপ্রধানের এই সফরে জাপানের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। দুই দেশের সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ‘নতুন মাত্রা’ লাভ করবে।
মঙ্গলবার পঞ্চম বাংলাদেশ-জাপান সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত পঞ্চম বাংলাদেশ-জাপান সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। পালাক্রম অনুযায়ী এবারের অর্থনৈতিক সংলাপের আয়োজক দেশ জাপান। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। আজ এই সংলাপ শেষ হয়েছে।
পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মূলত ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়, যার ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারকরণে বাংলাদেশ-জাপান সরকারি-বেসরকারি যৌথ অর্থনৈতিক সংলাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে জানানো হয়, আজকের সংলাপে ঢাকা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দেন। সংলাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালকেরা অংশগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, জেবিসিসিআইসহ বিভিন্ন বেসরকারি বাণিজ্য সংগঠনের সভাপতি ও প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।
এতে আরও জানানো হয়, টোকিও প্রান্তে জাপান থেকে অংশগ্রহণকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন জাপানের মিনিস্ট্রি অব ইকোনমি ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহকারী মন্ত্রী হিরাই হিরোহিদে। এ ছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এবং জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রধানসহ অন্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাপানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিদ্যমান বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন সেক্টরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনিয়োগের সহযোগিতায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পক্ষ থেকে বক্তব্য দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ দেশে জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে আশ্বস্ত করা হয় এবং ইতোপূর্বে জাপানি বিনিয়োগকারীরা যেসব বিষয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, তার বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। জাপানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গৃহীত কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং ভবিষ্যতেও এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত জাপান সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে সরকারপ্রধানকে জাপানের সম্রাট অভ্যর্থনা জানাবেন। দেশটি সফরকালে শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার সম্মানে একটি কাজের নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগবিষয়ক এক শীর্ষ সম্মেলন, কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং বাংলাদেশ সম্প্রদায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন জাপানি নাগরিকের হাতে ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার সম্মাননা তুলে দেবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।