মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার সময় মানবজাতি, মানব সভ্যতা ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা চলে আসে। উন্মুক্ত মহাবিশ্বে অতি বৃহৎ সময়ের প্রেক্ষাপটে মানুষের ভবিষ্যৎ কী? সুদূর ভবিষ্যতে প্রাণ ও সভ্যতা কীভাবে নিজেদের টিকিয়ে রাখবে? টিকে থাকার জন্য জীবন্ত প্রাণেরা কোন প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেবে, তা বলা মোটামুটি অসম্ভব। তবে প্রাণ ও সভ্যতার টিকে থাকা নির্ভর করে শক্তির উৎসের ওপর।
যেমন পৃথিবীর ক্ষেত্রে শক্তির উৎস হচ্ছে সূর্য। পৃথিবীর সব প্রাণ ও সভ্যতা পুরোপুরি নির্ভর করে আছে সূর্যের ওপর। সূর্য না থাকলে কোনো প্রাণও টিকে থাকতে পারত না, কোনো সভ্যতারও জন্ম হতো না।
আগামী ১০১০০ বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির উৎস বিদ্যমান থাকবে। তত্ত্ব অন্ততপক্ষে সে কথাই বলে। সভ্যতা যদি সে সময় পর্যন্ত টিকে থাকে, তাহলে এরপর থেকেই সভ্যতাকে শক্তি সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। সীমাবদ্ধ কিছু শক্তি নিয়ে অনিশ্চিত দিন পার করতে হবে।
এ সময়ের পর কী ঘটবে কিংবা এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার উপায় কী, তা এখনো অমীমাংসিত রহস্য। তবে এ ব্যাপারে কিছু অনুমান ও সম্ভাবনা আছে। পরবর্তী সময়ে এসব সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
মহাবিশ্ব সম্বন্ধে ওপরে যে ধারণা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো উন্মুক্ত মহাবিশ্ব মডেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। উন্মুক্ত না হয়ে এই মহাবিশ্ব যদি বদ্ধ হয়, তাহলে কী হবে? মহাবিশ্ব যদি বদ্ধ হয়, তাহলে এর প্রসারণ একটা নির্দিষ্ট সীমায় গিয়ে থেমে যাবে। বর্তমানে গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যে গড় যে দূরত্ব বিদ্যমান, তা ধীরে ধীরে দ্বিগুণ হবে। এ অবস্থায় এটি ৪০ বা ৫০ বিলিয়ন বছর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবে। এরপরই প্রসারণের উল্টো প্রক্রিয়ায় সংকুচিত হওয়া শুরু করবে।
একটি সিনেমাকে যদি ব্যাকওয়ার্ড-এর মাধ্যমে উল্টো করে টেনে শেষ থেকে শুরুতে আনা হয়, তাহলে যে রকম হবে, মহাবিশ্বের সংকোচনের ঘটনাও সে রকমই হবে। ৯০ থেকে ১১০ বিলিয়ন বছর পর মহাবিশ্বের ঘনত্ব অত্যন্ত বেড়ে যাবে। পাশাপাশি প্রচণ্ড উত্তপ্তও হয়ে যাবে। এর পরপরই বিগ ক্রাঞ্চ বা বৃহৎ সংকোচন সংঘটিত হবে। প্রচণ্ড উত্তাপে মহাবিশ্বের সব বস্তু একত্রে মিলে যাবে। তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো ফাঁকা থাকবে না, সব দিক থেকে পূর্ণ হয়ে যাবে।
এ যেন অনেকটা গ্রহ–নক্ষত্র–গ্যালাক্সির ‘সংঘবদ্ধ সংকোচন’। এই পরিস্থিতিতে কোনো প্রকার প্রাণ টিকে থাকার সম্ভাবনা একদমই ক্ষীণ। বিগ ক্রাঞ্চের পর কী ঘটবে কিংবা সেখানে ‘পরে’ বলতে আদৌ কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকবে কি না, তা কেউ জানে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।