দেশে বর্তমানে মহামারী করোনার তাণ্ডব চলছে। অচেনা এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই প্রাথমিকে সুখবর দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পণ্ডিত।
মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, করোনার কারণে বিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। করোনা চলে গেলে এসব স্কুল পুনরায় চালু অনেক চ্যালেঞ্জিং। কারণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিনের ব্যাপার রয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল কন্টেন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হবে। করোনার মতো যে কোনো মহামারিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় যাতে কোনো বাধা না আসে সেজন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। স্কুলগুলোতে কম্পিউটার ও ডিজিটাল স্ক্রিন কেনা হবে। গত বছর ২৬ হাজার কম্পিউটার কেনার কথা ছিল কিন্তু করোনার কারণে কিনতে পারিনি। তবে এবার সব মিলিয়ে ৪০ হাজার কম্পিউটার কেনা হবে।
আরো পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন উচ্চধাপে ফিক্সেশনের আদেশ জারি
তিনি আরও বলেন, ডিপিই আরও ৫ দশমিক ৪ কোটি ডলার অনুদান দেবে। এই অনুদানের টাকায় সরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। মূলত উন্নত বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান আরও উন্নত করতে চাই।
হাওর ও চর এলাকায় স্কুল নির্মাণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে শিক্ষার্থী আছে সেখানেই বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে। আমরা এই বিষয়ে একটা জরিপও করছি। নতুন করে দেশে আরও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে।
ফলে এসব বিদ্যালয়ে নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ও হাইজিন, গুণগত মান, সবার জন্য সমান সুযোগ ও টেকসই ব্যবস্থায় ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করতে ১২৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৭টি। তার মধ্যে সরকারি বিদ্যালয় ৬৫ হাজার ৬২০টি। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার একশ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। যার মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৮৬০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩৬ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৮ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৮ লাখ ২৫ হাজার ২১৮ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
নতুন করে স্কুলে এসে এসব শিক্ষার্থী যাতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে সেই জন্যই ‘বাংলাদেশ কোভিড-১৯ স্কুল সেক্টর রেসপন্স’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য সুখবর, বেতন পাবেন উচ্চধাপেই
প্রকল্পের মোট ব্যয় ১২৮ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। এই বিশাল উদ্যোগ বাস্তবায়নে ১২৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা অনুদান দেবে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (ডিপিই) বাকি টাকা সরকারি অর্থায়ন থেকে মেটানো হবে। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পযর্ন্ত সকল বিষয়ের ডিজিটাল কন্টেন্ট হবে। এই ডিজিটাল কন্টেন্টগুলো ডাউনলোড করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে প্রদশর্ন করা হবে। ফলে শিক্ষার্থীরা খুব আনন্দের সঙ্গে তাদের শিখন সম্পন্ন করতে পারবে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।