ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের তথ্যমতে, গ্রহ হওয়ার জন্য চারটি মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। গ্রহ হতে হলে মহাকাশের কোনো বস্তুকে অবশ্যই যথেষ্ট বড় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে বৃত্তাকার হতে হবে। মাধ্যাকর্ষণের কারণে কক্ষপথ থেকে সব গ্রহাণু ও অন্যান্য আবর্জনা দূরে ঠেলে দিতে পারবে বস্তুটি। এর পাশাপাশি বস্তুটিকে সূর্যের মতো কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে হবে এবং অন্য কোনো গ্রহের বা মহাকর্ষীয় বস্তুর উপগ্রহ হওয়া যাবে না। গ্রহের এমন বৈশ্বিক সংজ্ঞা ২০০৬ সালে চূড়ান্ত করা হলেও এখনো তা সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃতি পায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কাইলার গ্রেসন বলেন, ‘চাঁদ আসলে গ্রহ কি না, তা নির্ভর করে আপনি কাকে প্রশ্ন করছেন, তার ওপর।’ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের ২০০৬ সালের সংজ্ঞা অনুসারে, গ্রহ ও বামন গ্রহের মধ্যে একটি মোটামুটি রেখা রয়েছে। যে কারণে প্লুটোকে গ্রহ থেকে বামন গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিছু গ্রহের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা ভিন্ন সংজ্ঞা বিবেচনা করেন। প্লুটো, অন্যান্য বামন গ্রহসহ চাঁদকে গ্রহের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন তারা।
গ্রহবিষয়ক বিকল্প একটি সংজ্ঞা বেশ জনপ্রিয়। জিওফিজিক্স অনুসারে, কোনো গ্রহ বা গ্রহের অংশ এমন কিছু যা বৃত্তাকার হওয়ার জন্য যথেষ্ট বড় কিন্তু এটি কখনোই পারমাণবিক ফিউশন থেকে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না। এই সংজ্ঞার প্রথম অংশ গ্রহগুলোকে সৌরজগতের ছোট ছোট বিট থেকে গ্রহাণুর মতো বিভক্ত করেছে। আর দ্বিতীয় অংশ গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে একটি রেখা টেনে দিয়েছে। এ সংজ্ঞা অনুসারে, পৃথিবী একটি গ্রহ, একই হিসেবে চাঁদ ও প্লুটোও গ্রহ হবে।
আমাদের গ্রহের তুলনায় চাঁদ আশ্চর্যজনকভাবে বড়। অন্যদিকে প্লুটোর সবচেয়ে বড় চাঁদ ক্যারনের আকার প্লুটোর অর্ধেক। ক্যারনের আকারের কারণে এটিকে প্রায়ই প্লুটোর চাঁদের পরিবর্তে একটি বাইনারি গ্রহ মনে করা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কাইলার গ্রেসন বলেন, ‘কোনটি গ্রহ আর কোনটি নয়, তার অস্পষ্টতা আসে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সংজ্ঞা থেকে। মহাবিশ্বের বেশির ভাগ বস্তুর সংজ্ঞার অর্থ স্পষ্ট নয়, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমরা কীভাবে কোন বস্তুকে দেখব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।