ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। ফয়সাল দেশের বাইরে চলে গেছেন—এমন নির্ভরযোগ্য তথ্যও তারা পাননি বলে জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
এক প্রশ্নে খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফয়সালের শেষ অবস্থান নিয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এটা পেতে আমাদের বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তবে সে যে দেশের বাইরে চলে গেছে—এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাইনি। অনেক সময় অপরাধীদের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়।’
হাদি হত্যাকাণ্ডে এখনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পাইনি। তবে সঠিক তথ্য পেতে চেষ্টা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবির প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফয়সালের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। আপনারা (সাংবাদিক) যেমন শুনছেন, আমরাও বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নয়, রাজনৈতিকভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। ফয়সাল ও আলমগীরকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারিনি, ফলে সেভাবে এখনো জানা যায়নি।’
শফিকুল ইসলাম জানান, হাদিকে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসামি গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, অস্ত্র, গুলি ও পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে রোববার দুপুরে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম জানান, হাদির হত্যাকারী ফয়সাল ও তার সহযোগী ভারতে পালিয়ে গেছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সাক্ষাৎকারে এ পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, গত আট দিনে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) হাদি হত্যা মামলার বিষয়ে ‘বেশ খানিকটা অগ্রগতি’ সাধন করতে সক্ষম হয়েছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় থাকা হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার পর সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় করা মামলায় আসামি হিসেবে সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। তাদের মধ্যে হুমায়ুন ও হাসি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রিমান্ড শেষে নুরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা রিমান্ডে রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



