জুমবাংলা ডেস্ক : এ যেন কোনো হলিউডি থ্রিলার সিনেমার কাহিনী। হ্যাকার চক্রের হাতে জিম্মি চট্টগ্রামের একটি পরিবার। যতবারই মোবাইল সেট কিংবা সিম পাল্টানো হোক না কেন প্রতিবারই হ্যাক করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব তথ্য। বাসায় বসে করা আলাপের তথ্যও পৌঁছে যাচ্ছে তাদের হাতে।
জানা গেছে, হ্যাকার চক্রের যন্ত্রণায় নাজেহাল চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার এই পরিবারটি। গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে পরিবারটিকে নানাভাবে দুর্ভোগে ফেলছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। পরিবারের সদস্যরা বাসায় যে মোবাইল নম্বরই ব্যবহার করুক, তাৎক্ষণিকভাবে তার তথ্য চলে যাচ্ছে চক্রটির কাছে। অসংখ্যবার মোবাইল ফোনসেট এবং সিম পাল্টালেও ভোগান্তি থেকে রেহাই মিলছে না। হ্যাক করা নম্বর থেকে গভীর রাতে স্বজনদের কাছে ফোন দেওয়া, অশ্লীল এসএমএস পাঠানো, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে পণ্য অর্ডার করা এখন প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগকারী গৃহবধূ জয়নাব বেগম জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে ক্যাশ অন ডেলিভারির অর্ডার দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিয়ে এসে আমাদের এখানে এসে ডিস্টার্ব করছে। অথচ আমরা কোনো পণ্য অর্ডার করিনি।
অভিযোগকারী সরোয়ার মোর্শেদ জানান, বিভিন্ন জন আমাদের ফোন কল দিয়ে বলছে, আমি নাকি তাদের ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করছি। কিন্তু আমি তো কাউকে কল দিচ্ছি না। এ জন্য অনেক বার নম্বর পরিবর্তন করেছি, কিন্তু এসব ঝামেলা থেকে নিষ্পত্তি পাইনি।
প্রতিনিয়ত মোবাইলে থাকা ফোন নম্বর, ছবিসহ সব ধরনের তথ্য মুছে দেয় চক্রটি। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে পরিবারটির স্কুলপড়ুয়া সন্তানকে। নিয়মিত শিক্ষকদের কাছে অশ্লীল এসএমএস পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তারা। অনলাইনে ক্লাস চলাকালে ডিভাইসে ঢুকে নানা ধরনের বিপত্তিও সৃষ্টি করা হয়। অন্তত ৩টি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এ শিক্ষার্থী।
স্কুলশিক্ষার্থী রাজেম সরোয়ার জানান, অনলাইন ক্লাস ও জুম ভিডিও মধ্যে অশ্লীল বার্তা দিচ্ছে। হঠাৎ করে ভিডিও সাউন্ড অন করে দিচ্ছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাকে।
মোবাইল নাম্বার এবং সেট হ্যাক করার অভিযোগ জানিয়ে পরিবারটি গত দু’বছরে হালিশহর থানায় দু’টি সাধারণ ডায়েরি করে। এত দিন পুলিশ তেমন কোনো ব্যবস্থা না নিলেও এখন সাইবার ইউনিটকে দিয়ে অনুসন্ধানের কথা জানালেন সিএমপি পশ্চিম জোনের উপকমিশনার।
সিএমপির উপকমিশনার আবদুল ওয়ারিশ জানান, এখানে কোনো সাইবার অপরাধ হচ্ছে কি না। সে জানার জন্য আমাদের সাইবার হেল্প নিচ্ছে। আশা করছি, ঘটনা উদঘাটন করতে পারব।
এদিকে পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন, বাসায় আলাপের তথ্যও চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে। এসএমএস আকারে আবার জানিয়েও দেওয়া হচ্ছে। সবশেষ শনিবার দুপুরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক ওই বাসায় যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হুমকি দিয়ে বার্তা দেওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।