জুমবাংলা ডেস্ক : জীবিকার তাড়নায় বাংলাদেশ থেকে ওমান, সেখান থেকে তুরস্ক। গত মাসে সেখান থেকে ইউরোপের দেশ গ্রিসে পাড়ি দিচ্ছিলেন। মধ্যপথে বরফের পাহাড় পার করতে গিয়ে জীবন হারাতে হয়। সিলেটের বালাগঞ্জের এনামুল এহসান জায়গীরদার ফয়ছলের (৩০) জীবন এভাবেই শেষ হয়ে যায়।
ফয়ছলের মৃত্যুর ২৪ দিন পর দেশে আনা হয়েছে তার মরদেহ। গতকাল রবিবার বিকেল ৫টায় একটি ফ্লাইটে আসে ফয়ছলের লাশ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ফয়ছলের লাশের কফিন গ্রহণ করে পরিবার।
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মহুদ আহমদ জায়গীরদার ও খেলা বেগম চৌধুরী দম্পত্তির ছেলে ফয়ছল। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
১৯ দিন আগে বরফে ঘেরা একটি পাহাড় থেকে ফয়ছলের লাশ উদ্ধার করে গ্রিস কর্তৃপক্ষ। গ্রিসে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ফয়ছলের নিখোঁজের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রিস প্রশাসনকে তার লাশ খোঁজার জন্য আবেদন করা হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনে সাড়া দেয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয় ফয়ছলের লাশ খোঁজার জন্য।
রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন জানান, গ্রিসের আলেকজান্ডার পলি সীমান্তে পাহাড়ী এলাকায় ফয়ছলের মরদেহ শনাক্ত করা হয়। পরে সেখানকার ছবি তুলে নিশ্চিত হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ফয়ছলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আলেকজান্ডার পলি হাসপাতালে নিয়ে হিমাগারে রাখা হয়।
ফয়ছলের লাশ হস্তান্তরের পর বিমানবন্দর থেকে রাত দেড়টার দিকে বালাগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয় পরিবার। আজ সোমবার দুপুর ২টার দিকে বোয়ালজুড় বাজার ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক করবস্থানে ফয়ছলের লাশ দাফন করা হয়।
ফয়ছলের ছোট ভাই রাজিমুল এহসান জায়গীরদার রুজেল আমাদের সময়কে জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফয়ছলের সহযাত্রীরা তার মৃত্যুর খবরটি প্রথম জানায় তাকে। এ সময় কয়েকটি ছবিও পাঠান তারা। কিন্তু ঘটনাস্থাল চিহ্নিত করতে পারছিলেন না কেউ। পরে ছবিগুলো গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠান তারা। সেখান থেকে পূর্ণ সহায়তার কথা দেয় দূতাবাস।
রাজিমুল আরও জানান, গত ৬ বছর আগে ভিসা নিয়ে ওমান যান ফয়ছল। মাস ছয়েক আগে তিনি সেখান থেকে তুরস্ক যান। বিষয়টি পরিবারকে জানিয়েছিলেন তার ভাই। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফয়ছল বাড়িতে ফোন করে কথা বলেন ও দোয়া চান। কিন্তু সেখান থেকে তিনি গ্রিস যাবেন, সেটা পরিবারকে জানাননি।
ফয়ছলের সহযাত্রীরা রাজিমুলকে জানান, ৪ ফেব্রুয়ারি দালালের মাধ্যমে তুরস্ক সীমান্ত থেকে গ্রিসের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তারা। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রিস সীমান্তে পৌঁছান। তীব্র ঠাণ্ডায় সেখানে অবস্থান করা অবস্থায় রাত ২টার দিকে ফয়ছল মারা যান।
সেই ফয়ছলের লাশ গতকাল বাড়িতে আনা হয়। আজ তার লাশ দেখতে বাড়িতে ভিড় করে স্থানীয়রা। তার লাশ দেশে ফেরাতে গ্রিসের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় ফয়ছলের পরিবার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।