জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে আত্মীক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তার ভিত্তি রচিত হয়েছে রক্ত দিয়েই। স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদার আসন অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমাদের দেশের এই যাত্রাপথে বিভিন্ন দেশকে আমরা বন্ধু হিসেবে পেয়েছি। তেমনি একটি দেশ হলো ভারত।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুমবাংলার ফেসবুক লাইভে অতিথিরা এসব কথা বলেছেন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও জুমবাংলাডটকমের ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয় ২৪ মার্চ রাত সাড়ে নয়টায়।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির এবং যুক্তরাজ্যের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরাসমাস মুন্ডাস ফেলো ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসিফ বিন আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ পরিচালক সাজেদ ফাতেমী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার সফর নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ ও সমালোচনা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও এক সময় নরেন্দ্র মোদিকে নিষিদ্ধ করেছিল। কারণ অত্যন্ত বিতর্কিত গুজরাট দাঙ্গার নায়ক ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ঘটনার পর গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র দিয়ে অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলেছে। নানা ঘটনা পরম্পরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কটিও অন্যরকম এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, যারা মোদির বাংলাদেশে আসার বিরোধিতা করছে, তারা এটি করছে তাদের ধর্মীয় আবেগ থেকে। কিন্তু মোদির বাংলাদেশ সফরের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ নিহিত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, দুটি দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক বন্ধৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা একটি স্বাভাবিক শিষ্ঠাচারের মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশ ও ভারত দুটো দেশই কিন্তু এখন একটি টার্নিং পয়েন্টে আছে। আমরা অনেক পরিশ্রম করে অত্যন্ত সম্মানজনক একটি রাষ্ট্রের পর্যায়ে এসেছি। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। সেখানে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশি দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে নিজেদের প্রয়োজনেই।
সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরাসমাস মুন্ডাস ফেলো ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসিফ বিন আলী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মূলত দুটো গ্রাউন্ডের ওপর নির্ভরশীল। একটি হলো- বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশ চাইলেও এই এই সীমান্ত উপেক্ষা করতে পারবে না। আরেকটি হলো-মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকাএকাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ছিল আমাদের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য মিত্র।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের এক কোটি মানুষকে তাদের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া, তাদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রের যোগান দেওয়া, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অক্লান্ত চেষ্টা এবং সর্বোপরি মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করতে এসে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যের জীবন দান- এসবের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে একটি আত্মীক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।