শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি অপরিহার্য। একটি পুষ্টিকর ডায়েট শুধুমাত্র শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বরং তার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নিই কীভাবে সঠিক পুষ্টি শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
প্রোটিন
প্রোটিন হলো শরীরের অন্যতম প্রধান উপাদান। প্রোটিনের অভাবে শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি ধীর হতে পারে। মাছ, মুরগি, ডাল, ডিম, দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য প্রোটিনের চমৎকার উৎস। প্রোটিন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায় যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ।
ক্যালসিয়াম
ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। এটি হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে এবং হাড়কে মজবুত রাখে। দুধ, দই, পনির, পালং শাক এবং ব্রোকোলি ক্যালসিয়ামের ভাল উৎস। শিশুর ডায়েটে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম অন্তর্ভুক্ত করা ও তার হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে। সূর্যালোক ভিটামিন-ডি এর একটি প্রধান উৎস, তবে সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম, এবং ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ দুধ থেকেও এটি পাওয়া যায়। শিশুর ডায়েটে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে তার হাড়ের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় ।
আয়রন
আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং শরীরের কোষগুলোতে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। লোহা সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালং শাক, লাল মাংস, ডাল, এবং বাদাম শিশুর ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আয়রনের অভাব শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে ।
ভিটামিন এ
ভিটামিন-এ হাড়ের বৃদ্ধি এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, এবং কলা ভিটামিন-এ এর চমৎকার উৎস। এটি হাড়ের কোষগুলির গঠন ও পুনর্জন্মে সাহায্য করে, যা শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
জিঙ্ক
জিঙ্ক শিশুদের বৃদ্ধি এবং ইমিউন সিস্টেমের জন্য অপরিহার্য। এটি কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। মাংস, বাদাম, দই এবং শস্যজাত খাবারে জিঙ্ক পাওয়া যায়। শিশুর ডায়েটে পর্যাপ্ত জিঙ্ক থাকলে তার বৃদ্ধির হার বাড়ে ।
সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা
শিশুর ডায়েটে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুষম ডায়েট শিশুর সর্বাঙ্গীন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয় এবং তাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে এসব বিষয় সহায়ক হতে পারেন:
– প্রতিদিন তিন বেলা পুষ্টিকর খাবার এবং দুই বেলা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস দিন।
– প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করানোর চেষ্টা করুন।
– শিশুকে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন, কারণ ঘুম বৃদ্ধির হরমোন নিঃসরণে সহায়ক।
– শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে উৎসাহিত করুন, কারণ পানি দেহের সমস্ত কোষে পুষ্টি পৌঁছাতে সাহায্য করে।
সঠিক পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে আপনার শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সে সুস্থ, সবল এবং সক্রিয় জীবনযাপন করতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।