জুমবাংলা ডেস্ক : রাজবাড়ীতে বান্ধবীর জন্মদিনের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে একই বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ৭ জনকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ও ২ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রাজবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হলেন, অন্তরা বিশ্বাস (১২), প্রীতি (১২), হিয়া খাতুন (১২), সুরভী (১৩) ও তৃষা (১৪)। এরা সবাই কালুখালী উপজেলার দামুকদিয়া দূর্গাপুর আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এছাড়াও সুমিত্রা, তন্দ্রা, জয়া ও নদী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে। আঁখি (১২) ও রাফিয়ার (১৩) শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়েছে। তারাও একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, দুপুরে টিফিনের পর দামুকদিয়া দূর্গাপুর আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৩ শিক্ষার্থী তাদের বান্ধবী স্নিগ্ধার জন্মদিন উপলক্ষে তাদের বাড়িতে যায়। পরে সেখানে তারা ইলিশ-খিচুড়ি খায়। পরে তারা গান্ধিমারা বাজারের উত্তম সাহার দোকান থেকে কেনা কেক ও চকোবিন খান। এরপর তারা স্কুলে আসার পর একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানায়, জন্মদিন উপলক্ষে দাওয়াত পেয়ে তারা স্কুলের টিফিনের পর বান্ধবীর বাড়িতে যান। সেখানে তারা ইলিশ-খিচুড়ি খান। এরপর জন্মদিনে কেক কাটার আয়োজন না থাকায় গান্ধিমারা বাজারের একটি দোকান থেকে ৫ টাকা দামের কেক ও চকোবিন কিনে খেয়েছিল। এসময় চকোবিনের কিছু প্যাকেটে মেয়াদ ছিল না দেখার পর সেগুলো পাল্টে এনে খেয়েছে। এরপর থেকে তাদের কারও কারও মাথা ও পেট ব্যথা শুরু হয়।
নীলা সিংহ নামের এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়েসহ তার অন্য বান্ধবীরা আজ দুপুরে স্কুলের টিফিনের সময় স্নিগ্ধা নামের অপর এক বান্ধবীর জন্মদিন উপলক্ষে তার বাড়ীতে যায়। এসময় তারা ওই বাড়িতে ইলিশ খিচুড়ি খায়। পরবর্তীতে আমার মেয়েসহ তার বান্ধবীরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাদের সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, আমাদের মেয়েরা স্কুলের টিফিনের পর বান্ধবীর জন্মদিনে তার বাড়িতে গিয়ে খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় তাদের কারোর পেট ব্যাথা ও কারোর মাথা ব্যাথা শুরু হয়। আমরা তখনই তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি।
অপর এক শিক্ষার্থীর বাবা জাহাঙ্গীর বলেন, ওই বাড়ির খাবার খেয়ে যেহেতু কেউ অসুস্থ হয় নাই, সেহেতু ধারণা করা হচ্ছে দোকানের খাবার খেয়ে ওরা অসুস্থ হয়েছে। কারণ ওই দোকানে মেয়াদোর্ত্তীণ এবং নিম্নমানের খাবার ছিল।
দামুকদিয়া দূর্গাপুর আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক রেহানা পারভীন বলেন, টিফিনের পর আমি ক্লাসে গিয়ে দেখি মেয়েরা নাই। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করলে বলে ওরা স্নিগ্ধার জন্মদিন উপলক্ষে ওদের বাড়ি গেছে। পরে ওরা স্কুলে আসার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেয়েরা স্নিগ্ধাদের বাসায় খাবার খেয়ে দোকানের কেক কিনে খেয়েছে। এখন কি কারণে এই অবস্থা হয়েছে বলতে পারছি না। বিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থী রাজবাড়ীতে ও দুজন ফরিদপুরে ভর্তি আছে, চার জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফারিয়া রিফাত চৌধুরী জানান, দু’জন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদুপরে পাঠানো হয়েছে। রাজবাড়ীতে ভর্তি আছে ৭ জন। ধারণা করা হচ্ছে ফুড পয়েজনিং এর কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।