লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুন্দর নখ কে না চায়। বলা হয়ে থাকে হাতের সৌন্দর্যই নাকি নখে। সুন্দর নখে নেইল পলিশ বা নানা ধরনের নেইল আর্ট আর মেহেদি দিতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি নখ ভেঙে গেলে বা ভঙ্গুর হয়ে গেলে মন খারাপের সীমা থাকে না। আবার সুন্দর নখ বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সুস্বাস্থ্যেরও প্রতিফলন। কারণ, নখ কতটা শক্ত ও মসৃণ হবে, তা কিছুটা বংশগতির ওপর নির্ভর করলেও সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই পাওয়া যায় ঝকঝকে, সুন্দর আর শক্তপোক্ত নখ। চলুন জেনে নেওয়া যাক শরীরে যেসব পুষ্টি উপাদানের অভাবে নখ দুর্বল বা ভঙ্গুর হয়ে যায়, সেগুলোর ব্যাপারে।
প্রোটিন
শক্ত ও মজবুত নখ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কেরাটিন নামের প্রোটিন। তাই শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন না পেলে নখ হতে পারে দুর্বল ও ভঙ্গুর। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে খাবারে যোগ করতে হবে প্রোটিন। আর প্রোটিনের ভালো উৎস হলো মাছ, ডিম, মাংস ইত্যাদি। আবার একসঙ্গে একাধিক ধরনের উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন বিভিন্ন রকমের ডাল ও বিনসও ভালো ফলাফল দেবে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত প্রোটিনের উপস্থিতি নখের বৃদ্ধি আর শক্তির জন্য উপকারী।
বায়োটিন (ভিটামিন বি-৭)
নখ বারবার ভেঙে যাওয়ার কারণ হতে পারে শরীরে বায়োটিনের অভাব। মসৃণ নখের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান হলো এই বায়োটিন। ডিম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, তেলতেলে সামুদ্রিক মাছ, অ্যাভোকাডো, মিষ্টি আলু, ফুলকপি ইত্যাদিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন। আর যদি বায়োটিনের ঘাটতি বেশি হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারিত বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে।
আয়রন বা লৌহজাতীয় খাবার
ভঙ্গুর নখ, নখের ওপরের অংশ অমসৃণ ও এবড়োখেবড়ো হয়ে যাওয়া—এসবের অন্যতম কারণ আয়রন বা লৌহের অভাব। গরু, খাসি, হাঁস বা মুরগির কলিজা আর সামুদ্রিক মাছ আয়রনের ভালো উৎস। আর যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁরা কচু, বাদাম, পালংশাকসহ বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন। আয়রনজাতীয় খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন লেবু, পেয়ারা, আমলকী, কাঁচা মরিচ, কমলা, টমেটো, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খেলে আয়রন দ্রুত শোষিত হয়।
জিংক
নখের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণে আরেক অপরিহার্য খনিজ উপাদান জিংক। জিংকের অভাব থেকে নখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যায় এবং নখ পাতলা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিভিন্ন সবজির বীজ, যেমন কুমড়ার বিচি, তিল ও বাদাম রোজকার খাবারে জায়গা পেলে জিংকের ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে জিংক সাপ্লিমেন্ট।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
স্বাস্থ্যসচেতন মানুষমাত্রই জানেন শরীরে এই ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকা কী। মস্তিষ্কের প্রায় ৬ শতাংশ এই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে গঠিত। এ ছাড়া ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার আমাদের নখকে রক্ষা করে শুষ্কতা থেকে। মসুর ডাল, কাঠবাদাম, চিয়া সিড, আখরোট, তেলতেলে সামুদ্রিক মাছ, ফ্ল্যাক্সসিড, সয়াবিন ইত্যাদি খাবার আপনার ডায়েটকে ওমেগা থ্রিসমৃদ্ধ করে নখকে করবে মজবুত।
ভিটামিন এ, সি এবং ই
নখের যত্নে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় ভিটামিন এ, সি এবং ই থেকে। ভিটামিন এ কেরাটিন তৈরিতে সাহায্য করে আর এই কেরাটিন গোত্রের প্রোটিন দিয়েই আমাদের নখ গঠিত। আবার ভিটামিন সি সাহায্য করে নখকে শক্ত-মজবুত করতে। নখকে ময়েশ্চারাইজ করে ও পুষ্টি দেয় ভিটামিন ই। গাজর, মিষ্টি আলু, টক ফল, বিভিন্ন বাদাম ও বীজে এসব ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, এসব খাবার একবারে অনেকখানি না খেয়ে ধৈর্য ধরে প্রতিদিনের ডায়েটে যোগ করলে পাওয়া যাবে ভালো ফলাফল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।