জুমবাংলা ডেস্ক : শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার কলোকাঠি গ্রামের মৃত হাসেম চৌকিদারের ছেলে সাইফুল চৌকিদার। ৩ বছর আগেও তিনি রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বাবুর্চি (শেফ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে সেখানে আটকেপড়া শেফ সাইফুলও সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন।
ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিহত জঙ্গিদের সঙ্গে সাইফুলকেও আসামি করা হয়েছিল। পরে তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সাইফুলের পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র আয়ের উৎস। এখন হলি আর্টিজান থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা পাঠালে এবং সেলাই মেশিন দিয়ে কাপড় সেলাই করে তিন সন্তান নিয়ে কোনোরকম জীবনযাপন করছেন তার স্ত্রী।
সাইফুলের বড় মেয়ে সামিয়া নড়িয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে, ছোট মেয়ে জিদনী পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। আর ছোট ছেলে হাসানের বয়স ২ বছর ৯ মাস। বাড়িতে পুরুষ কেউ আসলেই হাসান দৌঁড়ে গিয়ে বাবা বলে ডাকে, কান্নাকাটি করে।
নিহত সাইফুলের মা সমেরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাই আমরা লাশটা ফেরত চেয়েছিলাম। ঢাকায় নিয়ে ডিএনএ টেষ্ট করিয়েছিল। নড়িয়া থানা থেকেও সাইফুল ভালো লোক বলে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছিল। কিন্তু এত কিছু করার পরও ছেলের লাশটা পাইনি।’
সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর লাশটি যদি সরকার ফেরত দিত তাহলে আমার সন্তানরা তার বাবার কবরটি দেখতে পেত।’
তার পৌনে তিন বছরের সন্তান হাসানকে দেখিয়ে বলেন, ‘সব সময় বলে আমার আব্বু ঢাকায় আছে, কখনও বলে আব্বু বিদেশে আছে। বাড়ির ওপর দিয়ে হেলিকপটার উড়ে গেলে বলে আব্বু হেলিকপ্টারে আসবে। কখনও নতুন পোশাক কিনে দিলে বলে আব্বু পাঠাইছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের কোনো সাহায্য সহযোগিতা করতো তাহলে আমার সন্তানদের পড়াশুনা ও তাদের ভবিষ্যৎ ভালো হতো। আমি সরকারের কাছে সাহায্য সহযোগিতা চাই।’
দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে সাত জঙ্গিকে ফাঁসির আদেশ ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সূত্র : আমাদের সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।