জুমবাংলা ডেস্ক : দুইদিনের ব্যবধানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ দু’দেশের মধ্যে সকল প্রকার আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় গ্রামবাসী ও পেট্রাপোল বন্দরের শ্রমিকরা। রবিবার বিকেলে হঠাৎ করে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাসের কারণে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরে দীর্ঘ ৪০ দিন দু’দেশের মধ্যে সকল প্রকার আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ভারতের কেন্দ্রী সরকারের নির্দেশে দু’দেশের কাস্টম, বন্দর ও ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় বৈঠক করে গত বৃহস্পতিবার জরুরি পণ্য রফতানির মধ্যে দিয়ে সীমিত আকারে দু’দেশের মধ্যে আমদানি বাণিজ্য শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে আমদানি বাণিজ্যে বন্ধ রাখার জন্য শনিবার ও রবিবার ভারতের বনগাঁ থেকে পেট্রাপোল বন্দর এলাকা পর্যন্ত স্থানীয় গ্রামবাসী ও বন্দর শ্রমিকরা পেট্রাপোল-কলকাতা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করতে থাকে। যার ফলে কার্যত দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ট্রাক লোডিং-আনলোডিং শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি অমিত কুমার বসু বলেন, লকডাউনে শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের স্বার্থ না দেখা হলে কোনোভাবেই আমরা বাণিজ্যের কাজ চলতে দেবো না। পেট্রাপোল বন্দর ৪০ দিন বন্ধ হয়ে আছে। এরমধ্যে কোন ব্যবসায়ী সংগঠন, ক্লিয়ারিং এজেন্ট, ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট, ট্রান্সপোর্ট, বা এক্সপোর্টারসহ কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের এই দুঃসময়ে তারা কেমন আছে তার খোঁজখবর নেননি।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় গ্রামবাশি ও বন্দর শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে কয়েকজন ব্যবসায়ী সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি শুরু করেছে। ফলে শনিবার সকাল থেকে বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন শ্রমিকরা। পেট্রাপোল বন্দরের লোড-আনলোডের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের দাবি, বন্দরে আমদানি-রফতানির কাজ চললে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিশেনের সাধারণ সম্পাদক শ্রী কার্তিক চক্রবর্তী জানান, সরকারি নির্দেশনা মেনে ভারত বাংলাদেশে দু’দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি বাণিজ্য শুরু হলেও স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বনগাঁ উত্তরের সাবেক এমএলএ গোপাল সেন ও বনগাঁ পৌরসভার মেয়র শংকর আঢ্য ডাকু পণ্য রপ্তানিতে বিরোধিতা করে কালিতলা পার্কিং থেকে কোন পণ্য বোঝাই ট্রাক ছাড়েনি। তারা সাধারণ জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আন্দোলন শুরু করে।
শুধু কালিতলা পার্কিং এ বর্তমানে ২২৫৭ টি বিভিন্ন ধরণের ট্রাক রফতানি পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। এছাড়া সেন্টাল পাকিং ও এর আশপাশে আরো কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারত থেকে রফতানি বাণিজ্য চালু থাকলে দু’দেশের ট্রাক ড্রাইভার ও শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনা ছড়াতে পারে, এমন অভিযোগ এন তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ উত্তরের সাবেক এমএলএ গোপাল সেন ও পৌরমেয়র শংকর আঢ্য ডাকু জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে আন্দোলন করে পণ্য রফতানি বন্ধ করে দিয়েছেন।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।