জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান বিশ্বের কোনো দেশের তুলনায় কম নয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, উন্নত দেশের মতো সুযোগ দেওয়া গেলে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা নিজেদের যোগ্যতা বিশ্বে তুলে ধরতে পারবেন। খুব শিগগিরই দলে দলে মানুষ বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসবে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশে আমাদের দেশের মানুষ নিয়মিতই চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। অথচ ভারত ও অন্য অনেক দেশ থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছিল এমন রোগীর চিকিৎসা আমরা সফলভাবে করেছি।
তিনি ভুটান থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর কথা উল্লেখ করে বলেন, কার্মাডেমার সফলভাবে চিকিৎসা করালাম, রোগী স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছে। তার এই চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে ভারত ও অন্য অনেক দেশ থেকে বলে দিয়েছিল। অথচ আমরা বাংলাদেশ থেকে তার চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হলাম। রোগী সুস্থ অবস্থায় এখন ভুটান চলে যেতে পারবেন।
২৩ বছর বয়সী কার্মাডেমার চিকিৎসার জটিলতা সম্পর্কে সামন্ত লাল সেন বলেন, এই রোগীর চিকিৎসা করা ছিল অত্যন্ত কঠিন ও জটিল কাজ। এর আগে ভারতে ও ভুটানে তার অপারেশন হয়েছিল, থাইল্যান্ডেও সে চিকিৎসা নিয়েছিল। কিন্তু তার অপারেশনগুলো সাকসেসফুল না হওয়ায় পরবর্তী অপারেশন করাটা ছিল ভীষণ জটিল, ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ। এ কারণে অনেক দেশই তার জন্য নতুন করে আরেকটি অপারেশন করার সাহস করতে পারেনি। আমরা এটিকে দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্ন ধরে নিয়ে চিকিৎসা বোর্ড করে এ অপারেশনে হাত দিই। দীর্ঘ সময় নিয়ে শরীরের অন্য জায়গা থেকে রক্তসহ মাংস, হাড় কেটে নাকে লাগিয়ে দেওয়া এবং নাকের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখাটা ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জের। সেই কঠিন কাজটি আমাদের চিকিৎসকরা সফলতার সঙ্গে করে দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি আমাদের দেশের চিকিৎসাসেবার জন্য বিরাট এক অর্জন। এখন এ রকম সফলতার পর ভুটানেও ১৫ শয্যার বার্ন ইনস্টিটিউট করার ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। নেপালসহ অন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোতেও এ রকম জটিল চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়াসহ বিদেশি রোগীদের দেশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে।’
সম্মেলনে ভুটানের রাষ্ট্রদূত মি. রিং চেং কুইং সিল বলেন, ‘এই জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেটিই করে দেখিয়েছে যা বিশ্বের অন্য দেশ পারেনি। বিশ্বের অন্য দেশগুলো যখন বলেছিল এই অপারেশন সম্ভব নয়, তখন বাংলাদেশ বলেছিল সেটি সম্ভব এবং বাংলাদেশ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এ জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ।
কার্মাডেমা বলেন, ‘যখন আমি সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, তখন বাংলাদেশের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন এবং সফল চিকিৎসা দিয়েছেন। এ জন্য আমি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
উল্লেখ্য, বিদেশ থেকে বাংলাদেশি ভিসায় চিকিৎসা নিতে আসা প্রথম কোনো রোগী ভুটানের কার্মাডেমা। গত ১৩ ডিসেম্বর তিনি চিকিৎসা নিতে আসেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।