আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে অন্তত ১২৭ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ৫ শতাধিক প্রবাসী। দেশে দেশে বাংলাদেশিদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবরে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে কমিউনিটিতে।
গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইনের কারণে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে মৃত ব্যক্তির নাগরিকত্ব জানানো হয় না। আবার অনেক দেশ সেই দেশের নাগরিক হয়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশি পরিচয় স্বীকার করে না। তাই সুনির্দিষ্ট করে প্রবাসে থাকা বাংলাদেশির মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায় না।
তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাধিক ৮২ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। নিউ ইয়র্কে এখনও বহু প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সোমবার ডা. মো. ইফতেখার নামে একজন প্রবাসী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস নর্থ হাসপাতালে মারা যান তিনি। ডা. ইফতেখার দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নিউ ইয়র্ক স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করেন। তার দেশের বাড়ি মানিকগঞ্জে। একই দিন নিউইয়র্কে বাকের আজাদ, আবদুর রাজ্জাক, মো. আফতাব উদ্দিন, আবুল ফাররাহ ও মিশিগান অঙ্গরাজ্যে ছফর উদ্দিনের মা (নাম জানা যায়নি) মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিউ ইয়র্কে কর্মরত বাংলাদেশি কুটনীতিকরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মার্কিন সরকার মৃত ব্যক্তির নাগরিকত্ব প্রকাশ না করার কারণে বাঙালি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে সেখানকার বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও স্থায়ী মিশন থেকে সব বাংলাদেশিকে সাবধানে থাকার এবং স্থানীয় আইন মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি মারা গেছেন যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে অন্তত ২৪ বাংলাদেশি মারা গেছেন। সেখানেও বহু প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ইউরোপের অপর দুটি দেশ স্পেনে ৪ জন এবং ইতালিতে ৩ জন মারা গেছেন। ইতালিতে কর্মরত একজন ক‚টনীতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশি মারা গেছেন এবং তাদের মৃত্যু সনদ ইস্যু করেছে ওই দেশের সরকার। যারা মারা গেছেন, তাদের বয়স ৫০ থেকে ৬০ এবং এদের মধ্যে একজনের বাড়ি নোয়াখালী, একজনের লাকসাম এবং অপরজনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে।
কানাডায় মারা গেছেন অন্তত দুই বাংলাদেশি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন একজন। দেশটিতে আক্রান্ত কমপক্ষে ২৫ জন প্রবাসী।
মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে ৬ বাংলাদেশি মারা গেছেন। দেশটির মদিনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। রিয়াদ ও জেদ্দা মিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা ছয়জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছি। আরও দু’জনের বিষয়ে আমরা জেনেছি, তবে তারা করোনাভাইরাসে মারা গেছেন কিনা তা নিশ্চিত নয়।
কাতারে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে দু’জনই বাংলাদেশি। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে কয়েক লাখ বাংলাদেশির বাস। কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কাতার সরকার দু’জন বাংলাদেশি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অবহিত করেছিল।
সুইডেনে ৮০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় ১ জন করে বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে লোহাগড়ার বৃদ্ধের মৃত্যু : লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি জানান, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামের সৈয়দ অলিয়ার রহমান (৮৫) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার শ্যালক সাংবাদিক আকরামুজ্জামান মিলু জানান, অলিয়ার রহমান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি নিউ ইয়র্ক শহরে ছেলেদের কাছে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সূত্র : যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।