আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা মোকাবিলায় সমগ্র ভারত যখন ব্যস্ত, ঠিক সেই মুহূর্তে শুরু হয়ে গেলো কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজ্যপাল জগদীশ ধনকড়েরও। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য সরকারকে কোনো নোটিশ না দিয় কলকাতায় মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) এসে হাজির কেন্দ্রের দুই পর্যবেক্ষক দল। তাদের বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার লকডাউন-বিধি ভঙ্গ করেছে। তাই তারা কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত ৭ হটস্পটযুক্ত জেলা পরিদর্শনে যাবেন। বিনা নোটিশে পর্যবেক্ষক দল এসে হাজির হওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিহনা বলছেন, ‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল বিনা নোটিশে কেন এই রাজ্যে এসেছেন? তা যতক্ষণ না আমাদের কাছে পরিষ্কার হবে, ততক্ষণ আমরা কোনো জেলা পরিদর্শণ করতে দেবো না।’
মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে চলছে রাজ্য সরকার। তাহলে বিনা নোটিশে রাজ্যে কেন পর্যবেক্ষক দল? এখানে সঠিক পদ্ধতি মানা হয়নি। রাজ্যকে সময়মতো জানানো উচিত ছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত পড়ে। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লেখেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত প্রথম দফার লকডাউনের সময় থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। রেশন কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব সব রাজনৈতিক দলই। রাজ্যপাল জগদীশ ধনকড় টুইটে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেলে বলছেন, জনগণ ইচ্ছে করলেই একমাসের রেশন একবারেই নিতে পারে। কিন্তু জনগণ একদিনের রেশনই ঠিকমতো পাচ্ছে না। এসব নিয়ে রাজ্যপালের বিভিন্ন ধরনের কটাক্ষ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তার বিবাদ চরমে।
এবার শুরু হলো কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বারবার বলে আসছেন, করোনা নিয়ে সঠিক তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরছে না রাজ্য সরকার। এমনকি এই রাজ্যে কী পরিমাণ র্যাপিড টেস্টের দরকার, তার সিকিভাগ টেস্টও করছে না রাজ্য সরকার। এর প্রত্যুত্তরে সরকার থেকে বলা হয়েছিল, কেন্দ্র পর্যাপ্ত কিট না দিলে র্যাপিড টেস্ট কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাছাড়া লকডাউনের বিধি-নিষেধ লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে এই সরকারের বিরুদ্ধে।
এইসব অভিযোগের ভিত্তিতেই পশ্চিমবঙ্গে হাজির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। বিনা নোটিশে। তারা সাতটি জেলা পরিদর্শন করে দেখবেন লকডাউন ঠিকমতো পালিত হচ্ছে কি না এবং কেউ না মানলে সরকার তার বিরুদ্ধে কতটা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তৃণমূল সরকার থেকে জানানো হয়েছে, এভাবে যখন-তখন পর্যবেক্ষণ করতে এলেই যে তা পারবে, তার কোনো মানে নেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় নিয়ম-নীতি মেনেই চলছে। পশ্চিমবঙ্গে করোনার হার দিল্লি বা মহারাষ্ট্রের চেয়ে অনেক কম। রাজ্যপাল শ্রী ধনকড় বলেন, রাজ্যের উচিত—এখন কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ানো। সংঘাত নয়, এখন বন্ধুত্বই বাঁচার একমাত্র রাস্তা। কিন্তু কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল পশ্চিমবঙ্গে আসার পর থেকে একবারও দেখা করেনি মুখমন্ত্রীর সঙ্গে। এমনকি সরকারের সঙ্গে তারা কোনো আলোচনায় বসতেও নারাজ। ফলে তাদের গতিবিধি নিয়ে ধন্দে রাজ্য সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।