বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্রদলের ৯ সদস্যের নতুন কমিটির সভাপতি ইয়ামিন, সহ সভাপতি তুহিন রানা এবং প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানাসহ ৩জনের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বেরোবি শাখার কর্মসূচি বাস্তবায়নে থাকার ছবি পাওয়া গেছে ।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোঃ রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রকাশ করা হয়।

নতুন কমিটির শীর্ষ দুই পদে দায়িত্ব পেয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ ইয়ামিন সভাপতি হিসেবে এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ জহির রায়হান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।

এ ছাড়া কমিটিতে দায়িত্ব পেয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাইদুল ইসলাম বাপ্পি, সহ-সভাপতি মোঃ তুহিন রানা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিফাত হোসেন রাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব গাজী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ সুমন হোসাইন, প্রচার সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা এবং ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক মোছাঃ আসমা আক্তার খুশি।
এদিকে ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি মোঃ ইয়ামিন, সহ-সভাপতি মোঃ তুহিন রানা, প্রচার সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানার ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা কর্মী ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সম্প্রতি ঘোষিত ওই কমিটির সদস্য তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও পদপ্রত্যাশী কিন্তু কমিটিতে স্থান না পাওয়া একটি অংশ দাবি করছে যোগ্য ও ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগ মতাদর্শ ও ছাত্রলীগ ঘরানার লোক এনে কমিটি পূর্ণ করা হয়েছে, যা সংগঠন ধ্বংসের গভীর চক্রান্ত।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন মুন্না তার ফেসবুক ওয়ালে এক পোষ্টের মাধ্যমে লিখেন, ছাত্রলীগের কর্মী দিয়ে কমিটি!! এ কেমন ছাত্রদলের কমিটি!! বেরোবির ছাত্রদলের ইতিহাসের এক কলংকিত অধ্যায়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এহেন কাণ্ডজ্ঞানহীন কমিটি প্রত্যাখ্যান করলাম। বেরোবিতে ছাত্রদলের কি এতোই কর্মীর অভাব পরছে??
এদিকে এক বিবৃতিতে বেরোবি শাখা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান খান শ্রাবণ দাবি করেন—ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিতর্কিতদের জায়গা দেওয়া হয়েছে, যা সংগঠনের জন্য কলঙ্কজনক।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমি আমার জীবনের সোনালী সময় ছাত্রদলের জন্য উৎসর্গ করেছি। এই আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত ক্যাম্পাসে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠায় আমাদের অনেক রক্ত ঝরেছে। মামলা–হামলা, জেল–জুলুম সবকিছু সয়ে আমরা সংগঠনটিকে দাঁড় করিয়েছি। অথচ আজ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, শহীদ আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় আটক প্রক্টর ও আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকের আস্থাভাজনদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হলো—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক।”

তিনি আরও বলেন, “যেখানে আমিসহ প্রতিষ্ঠাতা কমিটির সবাই জীবন বাজি রেখে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে লড়েছি, সেখানে সেই ছাত্রলীগের ব্যক্তিদের ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান দেওয়া কখনোই মেনে নেওয়ার মতো নয়।”
বিবৃতিতে তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, “আমি কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে তাদের ছাত্রলীগ–সংশ্লিষ্টতার তথ্য তুলে ধরেছি। দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে দাবি করছি—কে এই কমিটি করলো, কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে, সবকিছুর বিচার করা হোক।”
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, মোরাল অব দ্য স্টোরি হলো আগের ছাত্রলীগ, বর্তমানের ছাত্রলীগ কর্মী ইয়ামিন এখন শাখা ছাত্রদলের সভাপতি। কত বড় প্রমোশন।কমিটিতে পদ পাওয়া আরো অনেকেই ছাত্রলীগের।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি মোঃ ইয়ামিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সে গুলো এডিট করা। ছাত্রলীগের সাথে তোলা এমন ছবি আমার নাই। সেন্ট্রালে আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের রাজনীতি করি। ছাত্রলীগের সময়ও আমি ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি এবং ছাত্রলীগের আক্রমণের শিকার হয়েছি এটা বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে গুপ্ত শিবির এগুলো নিয়ে কাজ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



