জুমবাংলা ডেস্ক: মাগুরার মহম্মদপুরের বাবুখালি ইউনিয়নের সেলামতপুর গ্রামে বেলের মালা তৈরি করে চলে শতাধিক নারীর সংসার। নিখুঁতভাবে তৈরি এ মালা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
সেলামতপুর গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ঘুরে দেখা যায়, নারীরা তাদের বাড়ির কাজের পাশাপাশি বেলের মালা তৈরির কাজ করছেন। কেউ কেউ আবার এই মালা তৈরির কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রায় সারাদিনই চলে এ কাজ। একটি বেলের খোলা থেকে সাধারণত দুইটি মালা তৈরি হয়। এক পোন মালার পাইকারি দর ৩০০ টাকা। ৮০টি মালায় হয় এক পোন।
মালার কারিগর বিষ্ণু প্রিয়া জানান, ৪০ বছর ধরে মালা কাটার কাজ করছেন তিনি। প্রথমে বাঁশের একটি ছোট লাঠির মাথায় ছাতার শিক লাগানো হয়। এরপর লাঠিতে একটি শক্ত সুতালি লাগানো হয়, যাতে লাঠি ঘোরানোর সময় ছিঁড়ে না যায়। একটি বেলের খোলার ভেতরের অংশে প্রথমে মালার ছক তৈরি করা হয়। এরপর খোলার উল্টো দিকে আবার লাঠি ঘুরিয়ে কাটা হয় মালা। এগুলো বেশ ক্ষুদ্র আকৃতি হয়ে থাকে। মালা তৈরির এ ক্ষুদ্র উপাদান রাখা হয় একটি পাত্রে। এরপর বাঁশের কাটির মধ্যে কাটিমের সুতার সাহায্যে ভরা হয় মালা।
বিভিন্ন স্থানের মহাজনরা এ মালা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যান। হিন্দুদের বিয়েতে এই মালা বেশি চলে। মৌসুমে তারা বিভিন্ন গ্রাম থেকে বেলের খোলা সংগ্রহ করেন। এরপর সারাবছর মালা তৈরি করেন।
সেলামতপুর গ্রামের আরেক কারিগর মিনতী বিশ্বাস জানান, ১০ বছর ধরে এ কাজ করছেন তিনি। প্রথমে বেল সংগ্রহ করে তা রোদে শুকাতে হয়। এরপর তৈরি হয় মালা। ভালো বেল হলে একটি থেকে তিন থেকে চারটি মালা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে এটি পরিপক্ব হতে হয়।
বেলের মালা কেনার মহাজন দেব দুলাল বিশ্বাস জানান, তার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। মহম্মদপুরের সেলামতপুর গ্রাম থেকেই বেশি মালা সংগ্রহ করেন তিনি। বিভিন্ন মেলায়, কীর্তন উৎসব ও বিয়েতে এগুলো বিক্রি হয়। এছাড়া বেলের মালা নড়াইল, রাজবাড়ী, খুলনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার মহাজনদের কাছে বিক্রি করা হয়। দিনদিন বেলের মালার চাহিদা বাড়ছে।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.