আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রিটেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চাপে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে। লন্ডনে ইনটেভি কেয়ারের শীর্ষ একজন চিকিৎসক অধ্যাপক হিউ মন্টোগোমারি এ পরিস্থিতির জন্য যারা লকডাউনে বিধিনিষেধ ভেঙ্গেছে, মাস্ক পড়েনি তাদেরই দায়ী করেছেন। খবর বিবিসি বাংলা’র।
তিনি বলেছেন, “যারা লকডাউন, বিধি-নিষেধ ভাঙছেন, মাস্ক ব্যবহার করছেন না, তাদের হাতে রক্ত রয়েছে”।
লন্ডনের একটি হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ রায় বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, তার চাকুরি জীবনে হাসপাতালে রোগীর এমন চাপ তিনি এর আগে কখনো দেখেননি।
তিনি বলছেন, তার হাসপাতালে অতিরিক্ত শতাধিক বেড সংযোজন করেও রোগীর চাপ সামাল দেয়া যাচ্ছে না।
“আমার হাসপাতালে বেড অনুযায়ী রোগী নেয়া হয়। কিন্তু বেড সব পূর্ণ হয়ে এখন অন্য জায়গা যেমন ওয়েটিং এরিয়া, করিডোর সব রোগীর জন্য ম্যানেজ করা হয়েছে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে যে কাকে রেখে কাকে চিকিৎসা দিবো”।
তিনি বলেন, একজন রোগী এলে তাকে তো অক্সিজেন, চিকিৎসা কিংবা প্রয়োজনীয় জরুরি অন্য সহায়তা দিতে হবে। এগুলো দিতে নার্স বা স্টাফ যত থাকা দরকার তা রোগীর অনুপাতে অনেক কমে গেছে।
মিস্টার রায় বলছেন, তার হাসপাতালে যেসব জায়গায় রোগী রাখা যায় সেগুলোর সব জায়গায় রোগী রাখার পরেও বাইরে রোগী অপেক্ষা করছিলো।
“কিন্তু আমরা তো এসেস করতে পারছি না যে কাকে টপ প্রায়োরিটি দেবো। আমরা কল্পনাও করতে পারিনি পরিস্থিতি এমন হবে”।
তিনি বলেন, ব্রিটেনে চিকিৎসা দেয়া একটি টিম ওয়ার্কের বিষয় অর্থাৎ ডাক্তার, নার্স, হেলথওয়ার্কার, অক্সিজেন ও চিকিৎসা যাকে যতুটুকু দরকার সেটি দিতে হয় ও এসব সাপোর্ট পর্যাপ্ত থাকতে হয়।
“কিন্তু আমরা হিমশিম খাচ্ছি যে কাকে রেখে কাকে রিসিভ করবো, কোনটাকে প্রায়োরিটি দিবো, কোথায় রাখবো, কি লজিস্টিক, কে অক্সিজেন ম্যানেজ করবে, কে ঔষধ দিবে -সব কিছু নিয়ে হিমশিম অবস্থা”।
ব্রিটেনে এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ চলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু দ্বিতীয় ওয়েভে এসে কী পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বজিৎ রায় বলছেন- ” ভয়াবহ। প্যাটেন্ট ওয়েটিং এশিয়ায় সেদিন দেখলাম নন কোভিড প্যাটেন্ট রোগী এসেছিলো। তাদের ওয়েটিং এশিয়ায় ট্রিটমেন্ট দিতে হচ্ছে। আর কোন জায়গা ছিলোনা। ওদিকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী অপেক্ষা করছে”।
“এ অবস্থা বাড়তে থাকবে- মনে হচ্ছে সেকেন্ড ওয়েভের পিক পয়েন্টে আমরা এখনো যাইনি”।
কিন্তু দেশটিতে হাসপাতালের বেড, আইসিও সব তো নির্দিষ্ট পরিমাণ- তাহলে কীভাবে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছে যে এর পরে কী করতে হবে।
বিভিন্ন হাসপাতালে কমিউনিকেশন ডেভেলপ করার যাতে এক হাসপাতালে জায়গা না থাকলে অন্য হাসপাতালে পাঠানো যায় কি-না -সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
মিস্টার রায় বলছেন, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে কিন্তু এ ধরণের ভয়াবহ অবস্থা হবে এটা কারও কল্পনাতেও আসেনি বলে মনে করেন তিনি।
আর এমন পরিস্থিতির জন্য নতুন ধরনের করোনাভাইরাসকেই দায়ী করেন তিনি।
“একজন থেকে আরেকজনে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে। মাঝে মানুষ বের হয়েছিলো। অনেকে গাফলতি করেছে। মাস্ক ব্যবহার করেনি, দূরত্ব বজায় রাখেনি। নতুন যে বৈশিষ্ট্য তা প্রচণ্ড দ্রুত ছড়াচ্ছে। এটা কল্পনাও করা যায়নি”।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।