লাইফস্টাইল ডেস্ক : যে কোনো পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারছে এডিস মশা। যে কারণে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শুধু চিকিৎসা দিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়, রুখতে হবে এডিসকে। সেলক্ষ্যে এখনই চিরুনি অভিযান না চালালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা তাদের।
মৌসুম শুরুর আগেই মঙ্গলবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ, ৬ মাসে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। মঙ্গলবার ডেঙ্গুতে আরো পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৭৮ জন। এটি একদিনে মৃত্যু এবং আক্রান্তের রেকর্ড।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ঢাকা উত্তরে ২৭টি এবং ঢাকা দক্ষিণে ২৮টি ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। এডিসের প্রকোপ কমাতে মঙ্গলবার থেকে ২৫টি ওয়ার্ডে তিন দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানান, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশিরভাগই মারা গেছেন হাসপাতালে ভর্তির ৭২ ঘন্টার মধ্যে, তাই ডেঙ্গুু আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ দেখা মাত্রই পরীক্ষা করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শও চিকিৎসকদের। বাড়তি যত্ন নিতে হবে দ্বিতীঁয় বা তৃতীয় বার আক্রান্তদেরও।
এ পরিস্থিতিতে, উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মৌসুমের আগেই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টি আর বেশি তাপমাত্রা এডিসের বংশবৃদ্ধির জন্য দায়ী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর বলেন, তাপমাত্রা যে হারে বেড়েছে এর আগে এমন ছিল না, তাই এডিসের বংশবৃদ্ধির হার কোথায় ঠেকবে তা বলা কঠিন। আগে নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের বিস্তার বেশি দেখা যেত। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে বহুতল ভবনেই ৪৩ শতাংশ লার্ভা মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে, সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কঠিন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা যে কোন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সক্ষম হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ কঠিন।
জুলাই মাসের শুরুতে জুনের চেয়ে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেঙ্গুর। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। শয্যার অভাবে মেঝেতে চিকিৎসা চলছে অনেকের।
মঙ্গলবার নতুন করে আরো ৬৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। যা চলতি বছরে, এক দিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮’শ জনে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন এক হাজার ৬ শ রোগী।
এডিসের জন্ম এখন ঘরে ঘরে, তাই নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।