জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ট্রাক থেকে মাটি পড়ে মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া বৃষ্টিতে সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে টানা হচ্ছে ইট ভাটার মাটি। বৃষ্টি হলেই সড়কে ঝরে পড়া মাটি পিচ্ছিল হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার ১৬টি ইটভাটার মধ্যে ২টি অটোভাটাসহ ৬টি ইটভাটা রয়েছে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে। এসব ইটভাটার মালিকেরা বর্ষা মৌসুমের কথা মাথায় রেখে ইট তৈরির জন্য ফসলি জমির মাটি কেটে এনে সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে এসব মাটির স্তুপ থেকে মাটি ধুয়ে সড়কের ওপর এসে পড়ে। এ কারণে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতি বছরই এ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী, ছোট যানবাহন, মোটরসাইকেল আরোহী এবং পথচারীরা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হন এবং দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের আরএমএস ব্রিকস নামের ইটভাটার মাটি মহাসড়ক ঘেঁষে রাখা হয়েছে। ওই ভাটায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার মাটির স্তুপ রয়েছে। মাটি টানার সময় ট্রাক থেকে মাটি উপচে সড়কের ওপর পড়ে এবং ট্রাকের চাকায় লেগে থাকা মাটি সড়কে লেপ্টে ইটভাটার সামনের উভয় দিকের প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কে মাটির আস্তরণ পড়ে আছে। প্রতিদিন খুচনি (দেশীয় কোদাল) দিয়ে রাস্তা থেকে মাটি খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তোলার চেষ্টা করে দুই জন শ্রমিক। এতে সড়কের বিটুমিন উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে সড়ক দুর্বল হয়ে পড়ছে।
একই অবস্থা উপজেলার শেখর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকায় অবস্থিত আল আলী অটো ইটভাটার। এ ছাড়া উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের জয়নগর বটতলায় অবস্থিত মেসার্স এসএমএ ব্রিকস, শেখর ইউনিয়নের মাগুরায় অবস্থিত মেসার্স শফি ব্রিকস, সদর ইউনিয়নে অবস্থিত গোল্ডেন ব্রিকস, ময়না ইউনিয়নের কান্দাকুলে অবস্থিত মেসার্স এমএমএস ব্রিকস, পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের পুতন্তীপাড়ায় অবস্থিত মেসার্স ভাই ভাই ব্রিকস, ময়না ইউনিয়নের ঠাকুরপুরে অবস্থিত রাজ ব্রিকসে সড়কের পাশে মাটির স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এসব ভাটার সামনের সড়ক মাটিতে লেপ্টে আছে।
এ ব্যাপারে সুশীল সমাজের বিশিষ্টজন অ্যাড. গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন কালের কণ্ঠকে বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত এবং প্রচলিত আইন মেনে ভাটা পরিচালনা করা উচিত। ভাটায় সরবরাহকৃত মাটি রাস্তায় পড়ে রাস্তার যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমন সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হওয়ায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় ভাটায় টানা ট্রাক থেকে পড়া ভেজা মাটির ফলে সড়কের বিটুমিন নষ্ট হয়ে যায়। এতে সড়কের ক্ষতি হয় ডেফিনিটলি। মাটি বোঝাই ট্রাকের উপরে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলে মাটি সড়কে পড়তে পারে না। আমি প্রতিবারই উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়ে কথা বলি। কিন্তু তার কোনো সমাধান হয় না।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, আমি গত দুইমাস আগে উপজেলার সকল ভাটা মালিকদের ডেকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছি। ট্রাকে মাটি টানার সময় ঢেকে রাখতে বলেছি। ভাটার সামনের সড়কে পড়ে থাকা মাটি প্রতিদিন অপসারণের জন্য ভাটা মালিকদের নির্দেশ দিয়েছি। কোনো ভাটা মালিক এ নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।