আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০২৫ আসর পাকিস্তানে আয়োজন নিয়ে এখনও দোলাচল কাটেনি। যার নেপথ্যে দেশটিতে গিয়ে ভারতের খেলতে না চাওয়া। ভারত এই টুর্নামেন্টও হাইব্রিড মডেলে খেলতে চায় বলে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কিছুদিন আগে জানিয়েছিল সংবাদসংস্থা আইএএনএস। তবে এর মাঝেও পাকিস্তান নতুন প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে। তারা ভারতের সব ম্যাচ লাহোরের এক ভেন্যুতেই আয়োজন করতে চায়।
গত ১৭ বছরে পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে যায়নি ভারতীয় দল। এর পেছনে রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের রাজনৈতিক বৈরি সম্পর্ক। যে কারণে ২০২৩ এশিয়া কাপেও ভারতের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে আয়োজক স্বত্ব ভাগাভাগি করে শ্রীলঙ্কা। একই হাইব্রিড মডেলে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও খেলতে চায় ভারত। আর এটি কিছুতেই হতে দিতে চায় না পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। কয়েকদিন আগে তারা আইসিসিকে তিনটি ভেন্যু করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের কথা জানিয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে এবার তারা ভারতের সব ম্যাচ কেবল লাহোরেই আয়োজন করতে চায়। একই শহরে হবে টুর্নামেন্টটির ফাইনালও।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে। তারা বলছে, এক শহরে ভারতের ম্যাচ আয়োজন করলে, লজিস্টিকস এবং ভ্রমণকেন্দ্রিক নিরাপত্তাজনিত মাথাব্যথা কমে যায় পিসিবির। এছাড়া লাহোর শহরের অবস্থান ভারত-পাকিস্তানে ওয়াগাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছাকাছি জায়গায়। আর এর মাধ্যমে সহজেই ভারতীয় দর্শকরা দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ থাকছে।
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি চলতি সপ্তাহের শুরুতে আইসিসির কাছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি খসড়া পাঠিয়েছিলেন। যেখানে তিনি জানান, টুর্নামেন্টটি আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আয়োজন করা হতে পারে। তবে সিদ্ধান্ত হবে প্রতিযোগী আটটি দেশের আলোচনার ভিত্তিতে। এর মাঝে আবার ভারত সেখানে খেলবে কি খেলবে না– এই তথ্যও নিশ্চয়তার বিষয় রয়েছে। ২০০৮ এশিয়া কাপের পর থেকে আর কোনো ভারতীয় দল পাকিস্তানে সফর করেনি। ওই বছরই মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে ক্রমাগত। এর আগে দেশ দুটি চার বছরে চারটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল। সেটাই ছিল আইসিসি ও এসিসি ট্রফির বাইরে ভারত-পাকিস্তানের কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে শেষ দেখা।
গত মঙ্গলবার করাচিতে পিসিবি সভাপতি নাকভি আশাবাদী হয়ে জানান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে আট দলের সবাই পাকিস্তানে সফর করবে। যেখানে তিনি ভারতের খেলতে না চাওয়ার কোনো নেই বলেও উল্লেখ করেন। পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টটি আয়োজনে খুব মরিয়া, কারণ ১৯৯৬ বিশ্বকাপের পর আর কোনো আইসিসির ইভেন্ট আয়োজন হয়নি দেশটিতে। এরপর ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কান দলের ওপর আরেক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপও সরিয়ে নেওয়া হয় পাকিস্তান থেকে। এরপর দেশটিতে ৬ বছর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয়নি।
পরবর্তীতে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরে বাবর আজমদের দেশে। যেখানে এরইমাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়া প্রায় দেশই আলাদাভাবে সিরিজ খেলতে গিয়েছে। কিন্তু ভারত বাদে। এর আগে সর্বশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসেছিল ২০১৭ সালে। যেখানে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আসন্ন আসরটিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে আয়োজক পাকিস্তানসহ ভারত, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।