আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীন সীমান্ত পেরিয়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৯টি দেশে পৌঁছে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভারতের কেরালা রাজ্যে।
সেখানে তিন জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে বলে নিশ্চিত করা গেছে।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজ পাওয়ার পরই এটিকে ‘দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা করেছে কেরালা রাজ্য সরকার। রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির
সোমবার কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে করোনাভাইরাসকে ‘রাজ্যের জন্য দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা করা হলো।
আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য নয়; প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পদক্ষেপগুলো আরও জোরালো করতে ও নাগরিকদের সচেতন করতে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, পুরো কেরালাজুড়ে ২ হাজার ২৩০ জনের বেশি মানুষকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৭৫ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকিদের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্যসচিব রাজন খোবরাগেইড বলেছেন, বিশাল পরিসরে আমরা কাজ করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের ৪০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তারা দিনরাত করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে শ্রম দিয়ে যাবেন। তাদের সহায়তায় রাজ্য সরকারের পশুপালন, রাজস্বসহ অন্যান্য চল্লিশটি বিভাগ কাজ করবে।
এনডিটিভি জানায়, সোমবার উহান ফেরত এক ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এর আগে এ ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত কি না, তা নির্ণয়ে ১৪০ জনের নমুনা কেরালার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৪৬ জনের শরীরে ভাইরাসটি পাওয়া যায়নি। তবে ৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে ল্যাব টেস্টে প্রমাণিত হয়। এ তিন আক্রান্ত চীনের উহান থেকে ভারতে ফিরেছেন।
এমন খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাকি ৯১ জনের ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে রাজ্যটি।
এমন আতঙ্কের মাঝেই করোনাভাইরাসকে ‘দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা এলো রাজ্য সরকার থেকে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তৃতীয় রোগীকে হাসপাতালে আলাদা করে রাখা হয়েছে। রোগীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা ওই রোগীকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
ওই তিন রোগীর বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে কে কে শৈলজা বলেন, করোনায় আক্রান্ত তৃতীয়জন কেসরগড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি পড়াশোনার জন্য এতোদিন উহানে অবস্থান করছিলেন। তাকে কাঞ্চনগড় জেলার কেসরগড় হাসপাতালে নিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তার থেকে এখন আর ভাইরাসটি অন্যত্র ছড়ানোর আশঙ্কা নেই বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন মন্ত্রী।
ওই ব্যক্তির আগে রোববার কেরালার আলাপপুজাতে দ্বিতীয় ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর আগে ৩০ জানুয়ারি রাজ্যের ত্রিশুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির খবর পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত চীনে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করছে। প্রতিনিয়তই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২৫ জন। আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।