অমিতাভ ভট্টশালী, বিবিসি : ভারতের কোলকাতায় করোনাভাইরাস সংক্রমণে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গেলে সেখানকার ডোম এবং স্থানীয় লোকেরা তা দাহ করতে দিতে বাধা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার এই বাধার কারণে শেষ পর্যন্ত দাহ করতে প্রায় ন’ঘন্টা দেরি হয়, যদিও করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হলে কী কী করণীয়, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।
প্রথমে মৃতদেহটি পরিবারের হাতে তুলে দিতেই দীর্ঘ সময় লেগে যায়, তারপরে পাওয়া যাচ্ছিল না শববাহী গাড়ি। সেটার ব্যবস্থা করার পর আবার বাধা পড়ে শ্মশানে। সেখানে ডোম এবং স্থানীয় লোকেরা করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে বলে দাহ করতে দিতে তীব্র বাধা দিতে থাকেন।
অবশেষে পুলিশের মধ্যস্থতায় মৃত্যুর প্রায় ন’ঘন্টা পরে, রাত পৌনে একটা নাগাদ মৃতদেহটি চুল্লিতে ঢোকানো সম্ভব হয় ।
সাতান্ন বছর বয়সী ওই কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী মারা যান কোলকাতার সল্ট লেক এলাকার এ এম আর আই হাসপাতালে। সেখানকার সূত্র বলছে, তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায় মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও শাশুড়ির শরীরেও করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে, এবং তারাও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে মৃতের ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।
এর পর খোঁজ করে আরেকজন আত্মীয়কে পাওয়া যায়, কিন্তু তিনিও দেহ নিতে অস্বীকার করেন।
হাসপাতালের ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, “রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ভবন থেকে অফিসার গিয়ে মৃত রোগীর স্ত্রীর সই নিয়ে দেহ হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু কোনও শববাহী গাড়ি ওই মৃতদেহ বহন করতে রাজী হয় নি। ঘন্টা দেড়েকের চেষ্টায় পুর নিগমের শববাহী গাড়িতে হাসপাতাল থেকে দেহ বার করা হয় রাত প্রায় ন’টার সময়ে।”
পুলিশের সহায়তায় দেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা শ্মশান ঘাটে। কিন্তু সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ডোমরা করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তির দাহ করাতে প্রবল আপত্তি করতে থাকেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশনা রয়েছে যে কীভাবে একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃতদেহ সৎকার করতে হবে। সেখানে বলা হয়েছে জীবাণুনাশক রাসায়নিক দিয়ে দেহ মুছতে হবে, যে বডিব্যাগে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে, সেটিকেও বাইরে থেকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
আর যারা মৃতদেহ পোড়ানোর কাজ করবেন, তাদেরও মাস্ক সহ ব্যক্তিগত প্রতিরোধক পোষাক পরতে হবে। ধর্মীয় রীতি সবই মানা যাবে, কিন্তু দেহ ছোঁয়া চলবে না।
এত নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় বাসিন্দা এবং ডোমরা ওই মৃতদেহ সৎকার করতে দিতে চান নি।
বড় পুলিশ বাহিনী গিয়ে মধ্যস্থতা করে রাত পৌনে একটা নাগাদ চুল্লিতে দাহ শুরু করাতে পেরেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।