আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ভারতের রাজধানী দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকার একটি মসজিদে তিন দিনব্যাপী তাবলিগ-ই-জামাতের আয়োজন করা হয়। ওই জমায়েতে অংশ নেয় দেশ-বিদেশের প্রায় আট হাজার মানুষ। আর সেখান থেকেই হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে দিল্লির ওই মসজিদে আয়োজিত তাবলিগ-ই-জামাতের জমায়েতে অংশ নেন দেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরগিজস্তান থেকে দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি। সেখানে অংশ নেয়াদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এতে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ২৪ জন।
তাবলিগ-ই-জামাত উপলক্ষে জমায়েতকারীদের বিরুদ্ধে বড় একটি অভিযোগ এসেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ধর্ম প্রচারকরা ভিসার নিয়ম ভেঙেছেন বলে জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় তাবলিগ জামাতের নেতা মাওলানা সাদ ও নিজামুদ্দিন মারকাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) মহামারি আইনে এই মামলা করা হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অবহেলার কারণে কয়েকশ লোকের জীবন বিপন্ন হওয়ায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজামুদ্দিন মসজিদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে।
দেশটির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই মারকাজ মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসা ৪৪১ জনকে করোনা ভাইরাসের লক্ষণসহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম উপেক্ষা করে প্রায় ২ হাজার লোক সেই মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থান করছিলেন। ৮ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের দুই দিনের ধর্মীয় সমাবেশ ২৮০ জন বিদেশিও ছিলেন।
এদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মিয়ানমার, কিরঘিস্তান, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, জিবুতি, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স বা কুয়েতের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ৩শ তাবলিগ সদস্য ছিলেন।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেছেন, নির্দেশ অমান্য করে সমাবেশ করায় তাদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেই জন্য সুপারিশ করে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছেও চিঠি লিখেছি।
এদিকে তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, প্রথমে দিল্লি সরকার এবং পরে প্রধানমন্ত্রী মোদি লকডাউন ঘোষণা করার পরই সারা দেশে ট্রেন ও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণেই তাদের সদস্যরা আটকা পড়েন এবং এক জায়গায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে বাধ্য হন।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, তাবলিগ জামাতের সদর দফতর নিজামুদ্দিন মারকাজের এক মুখপত্র ইউসুফ বলেন, ওই সভা সরকারি সমস্ত আইন মেনেই হয়েছিল। তারা স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই ধর্মীয় সম্মেলনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।