জুমবাংলা ডেস্ক : নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ১৯ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) উপকূলীয় উপজেলা সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি ইউনিয়নের উত্তর ছলিমপুর এলাকার সাগর পাড় থেকে স্থানীয়রা তাদের ধরে পুলিশে দেয়।
আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে আটজন পুরুষ, চারজন নারী ও সাতটি শিশু রয়েছে। সীতাকুণ্ড থানার ভাটিয়ারি পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই জহিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ওই রোহিঙ্গারা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে সাগর পথে ভাসানচর থেকে সীতাকুণ্ডে আসে। স্থানীয়রা তাদের দেখে একজন জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে পুলিশে খবর দেয়। তখন পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে গত মাসে ৪১ জন রোহিঙ্গা বহনকারী একটি ট্রলার সীতাকুণ্ড উপকূল ডুবে যায়। এ সময় ২১ জনকে জীবিত উদ্ধার করলেও বিভিন্ন সময় ১৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় ও পুলিশ।
বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ভাসানচরে রাখার জন্য সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে কয়েক দফায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এদিকে উন্নত বাসস্থান আর সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সত্ত্বেও ভাসানচরের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে টেকনাফে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের অনেকে বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে আটকও হয়েছে।
এছাড়া নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে পালিয়ে কক্সাবাজার ক্যাম্পেও চলে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। বিভিন্ন অজুহাতে এরই মধ্যে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। মূলত স্থানীয় মাঝ ধরা ট্রলার বা নৌযানে করেই পালানোর ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে পুলিশের হাতে বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। সম্প্রতি বিবিসি এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে ১৩ সদস্যের একটি দল ভাসানচর থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছায়। পালিয়ে আসার রোহিঙ্গা নারীদের একজনের সঙ্গে কথা হয় বিবিসির। তিনি জানান, তারা একসঙ্গে ১৩ জন মাছ ধরা নৌকায় করে পালিয়ে নোয়াখালী আসেন। সেখান থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম হয়ে তারা কক্সবাজার আসেন। এতে তাদের ৯০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলেও বিবিসিকে জানান তিনি।
পালিয়ে আসার কারণ হিসেবে ওই নারী বলেন, পরিবার ছাড়া সেখানে থাকাটা ভীষণ কষ্টের। একা একা থাকা তার পক্ষে সম্ভব না। তার উপর ছিল খাওয়া দাওয়ার কষ্ট। এমনকি যেসব মেয়েরা একা থাকে (সিঙ্গেল) তাদের ওপর ছেলেরা হামলা করতে চায়। অনেকের ঘরের মধ্যে তালা ভেঙে ঢুকে কাপড়চোপড় অনেক নিয়ে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সর্বশেষ, ভাসানচর থেকে এই রুটে পালানোর সময় একাধিক গ্রুপ এরই মধ্যে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। গত সপ্তাহে নোয়াখালীতে নারী শিশুসহ ১২ সদস্যের একটি দলকে স্থানীয় জনগণ ধরে পুলিশে দেয়।
ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসার পথে অসংলগ্ন আচরণ দেখে স্থানীয় জনগণ রোহিঙ্গাদের ধরে কোম্পানিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। বিষয়টি নিয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বিবিসিকে জানান এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।