জুমবাংলা ডেস্ক : কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভিজিএফের প্রায় ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকাকে আটক করা হয়েছে। বুধবার বিকালে ইউপি কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যানকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদে ৬ হাজার ১৭৮ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ৪৫০ টাকা করে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ আসে। চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধেক টাকা বিতরণ করে বাকীদের ঈদের পরে আসতে বলেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভিজিএফের টাকা ঈদের আগেই হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। তিনি তা না করে তিন সহস্রাধিক দরিদ্রদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে ফিরিয়ে দেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বঞ্চিতরা ইউপি কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ করতে থাকেন। পরে খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় তাদের কাছে ইউপি সদস্য ও বঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান অর্ধেক টাকা বিতরণ করে বাকি টাকা না দিয়ে ভুক্তভোগীদের ঈদের পরে আসতে বলেন।
ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল বলেন, ঈদের আগে বরাদ্দকৃত সব টাকা বিতরণের কথা থাকলেও চেয়ারম্যান অর্ধেক টাকা বিতরণ করে বাকি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা রেখেছেন যা আত্মসাতের সামিল।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৬ হাজার ১৭৮ পরিবারের মধ্যে ৩ হাজার ১৫০ পরিবারকে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাকী ৩ হাজার ২৮ পরিবারের টাকা চেয়ারম্যানের কাছে গচ্ছিত রয়েছে।
বুধবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গুনাইগাছ ইউপি কার্যালয়ের সামনে বঞ্চিতরা টাকার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। চেয়ারম্যানের কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন। সেখানে চেয়ারম্যানকে দীর্ঘ সময় দেয়া হলেও দরিদ্রদের বরাদ্দকৃত ৪৫০ টাকা করে ৩ হাজার ২৮ পরিবারের ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা তিনি দেখাতে পারেননি। এ সময় তিনি বলেন, ঈদের পর বাকি টাকা বিতরণ করা হবে।
এদিকে গত ৯ মে ওই ইউপির সংরক্ষিত আসনের সদস্যরা পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফের টাকা বিতরণের তালিকা চেয়ারম্যান তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে তৈরি করেছেন। তালিকায় একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির তালিকা এবং ভুয়া নাম ব্যবহার করে তালিকা প্রস্তুত করছেন বলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার ও গুনাইগাছ ইউপির দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ব্যাংক থেকে সমূদয় টাকা উত্তোলন হয়েছে কি না তা তিনি জানেন না, ভিজিএফের অবশিষ্ট টাকা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব নম্বরে না চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা আছে তাও তিনি জানেন না। মাস্টার রোল ঠিক আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেনি।
উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটককৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, সরকারি টাকা বিতরণে অনিয়ম করায় গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।