জুমবাংলা ডেস্ক: ভোলা জেলার দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় কিশোরীদেও আতপ্রত্যয়ী করে তোলার জন্য কারাতে প্রশিক্ষণ চলছে। দেশে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ প্রকল্প’র অধীনে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র অর্থায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলন এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে দৌলতখান উপজেলায় ২৮ জন, বোরহানউদ্দিনে ২৮ জন ও তজুমদ্দিদনে ২৪ জন নারীকে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ২টি ব্যাচের মাধ্যমে স্ব স্ব উপজেলা পরিষদে জাতীয় পর্যায়ের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ৮০ জনকে কারাতে প্রশিক্ষণ দেয়া হলেও পর্যায়ক্রমে এ তিন উপজেলায় মোট ২’শ জনকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসন এ কার্যক্রমের সহযোগিতায় রয়েছে। এর মাধ্যমে কিশোরীরা সামাজিক ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় নিজেদের সক্ষমতা তৈরির পাশাপাশি নিজের ভালো মন্দ বুঝতে শেখা ও সুস্থ থাকতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুুশীলনের টিম ম্যানেজার রকিবুল বাহার বাসস’কে জানান, এ কার্যক্রম দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিনে চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে এবং তজুমদ্দিনে শুরু হয়েছে ১৬ তারিখ থেকে। প্রত্যেক উপজেলায় ২ জন প্রশিক্ষক ২ ব্যাচে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ১১ থেকে ১৯ বছরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের পাশপাশি ঝরে পড়া শিক্ষার্থরাও এখানে অংশ নিয়েছে করাতে শিক্ষার। প্রথম পর্যায়ে টানা ৩২ দিনে ৩২ টি ক্লাস হবে। প্রত্যেকদিন তাদের আসা যাওয়ার খরচ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাল্য বিয়ে ছাড়াও নারীদের যৌন হয়রানী, নির্যাতনসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা থেকেও এ কার্যক্রম নারীদের রক্ষা করতে কাজ করবে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেককে সনদ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে কিশোরীদের কারাতে প্রশিক্ষণ তিনটি উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কিশোরীদের দারুণ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে এ কার্যক্রম নিয়ে। পরবর্তী ব্যাচের জন্য অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এ ব্যাপারে তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরিয়ম বেগম বলেন, কিশোরীদের কারাত প্রশিক্ষণ এ উপজেলায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে এ কার্যক্রম একটি প্রতিরোধ কর্মসূচি। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একজন কিশোরী যে মানসিক শক্তি পাবে, সেই শক্তি তার পরবর্তী জীবনে সমাজিক বৈষম্য রোধে রুখে দাঁড়াতে সহযোগিতা করবে। তাই বলা যায় নারী উন্নয়নে এটি একটি ভালো উদ্যোগ।
তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী নাদিয়া। তিনি প্রতিদিন কারাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তিনি জানান, এখানে প্রশিক্ষণ নেয়ার ফলে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। কারো সহায়তা ছাড়াই যে কোন সমস্যায় নিজের আত্মরক্ষা নিজেই করতে পারবেন বলে মনে করছে এ শিক্ষার্থী।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রশিক্ষণার্থী মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী নাহার মুন্নি বলেন, মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া তার পছন্দ নয়। তাই তিনি পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। করাতে শিখতে তার ভালো লাগছে বলেও জানান এ শিক্ষার্থী। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।