লাইফস্টাইল ডেস্ক : লিভার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। লিভার শরীরের যাবতীয় দূষিত পদার্থ পরিশোধন করে শরীরকে সুস্থ রাখে। তবে ইদানীং শরীরে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লিভারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অনেকে অল্প বয়সেই লিভার সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। এর প্রধান কারণ, অনিয়মিত জীবনযাপন ও খারাপ খাদ্যাভ্যাস। নিজেদেরই অসচেতনতার কারণে শরীরে বাসা বাঁধে লিভার আক্রান্তের মতো ব্যাধি।
অনেকেরই ধারণা, কেবল মদপান করলেই নাকি লিভারের ক্ষতি হয়। কিন্তু এই ধারণা ভুল। এর বাইরেও অনেক খাবার আছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে ক্ষতি হতে পারে লিভারের। তাই সবার খাবার সম্পর্কে জ্ঞান রাখা উচিত। কোনগুলো ক্ষতিকর খাবার, সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
চলুন জেনে নিই কোন খাবারগুলো খেলে লিভারের ক্ষতি হয়–
১৯৪৮ সালে বোস্টনে ফ্রেমিংহাম হার্ট স্টাডি নামক একটি গবেষণা শুরু হয়, যা এখনও চলছে। এই গবেষণা বলছে, শুধু অ্যালকোহল নয়, অতিরিক্ত চিনি দেয়া পানীয় বা অ্যালকোহলহীন সোডাও লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমার শঙ্কা তৈরি করে।
তবে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মিষ্টিজাতীয় পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে। যারা অ্যালকোহল পান করেন, তাদের তুলনায় যারা নিয়মিত বোতলের ঠান্ডা পানীয় খান, তাদের ফ্যাটি লিভারের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সপ্তাহে এক দিনও এ ধরনের পানীয় খাওয়া যথেষ্ট ক্ষতিকর।
মদপান লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অত্যধিক মদপানের ফলে প্রদাহ, ফাইব্রোসিস এবং লিভারের কোষগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত মদপান লিভার সিরোসিস হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই লিভার সুস্থ রাখতে মদপান এড়িয়ে চলা খুবই জরুরি।
এ তালিকায় আছে ময়দাও। এটিও লিভারের ক্ষতি করে? ময়দার তৈরি কোনো খাবারই বেশি খাওয়া ভালো নয়। কারণ ময়দা উচ্চ প্রক্রিয়াজাত। এতে খনিজ ফাইবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি কম থাকে। ময়দার রুটি, লুচি, পরোটা, রোল, চাউমিন, পিৎজা, পাস্তা, বিস্কুট, পাউরুটি— এসব যত কম খাবেন, ততই শরীরের জন্য উপকারী।
ফাস্ট ফুড আমরা সবাই পছন্দ করি। সামনে পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, ফ্রায়েড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিপস পেলে লোভ সামলাতে পারি না। কিন্তু এসব খাবার সহজে হজম হয় না। নিয়মিত ফাস্ট ফুড খেলে ফ্যাটি লিভারে ভুগতে পারেন।
রেড মিটও লিভারের ক্ষতি করতে পারে। এটি সহজে হজম হয় না। কারণ রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এবং এত বেশি পরিমাণ প্রোটিন ভেঙে ফেলা লিভারের জন্য কঠিন। অতিরিক্ত প্রোটিন ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়।
তেলেভাজা ও মসলাদার খাবার ভাজাভুজি, তেল-মসলাদার খাবারেও ভরপুর ফ্যাট থাকে। নিয়মিত এ ধরনের খাবার খেলে ফ্যাটি লিভারসহ আরও নানা ধরনের লিভারের রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
উল্লেখ্য, আমাদের লিভারে সাধারণত ৩-৪ পাউন্ড চর্বি থাকে। লিভার সেলের চারপাশেও কিছু চর্বি থাকে। এ চর্বির পরিমাণ কোনোভাবে বেশি হলে অর্থাৎ ১০ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়।
সময়মতো চিকিৎসা না নিলে রোগ জটিল হয়ে লিভার সিরোসিসের মতো জটিলতা হতে পারে। লিভারের মধ্যে সাধারণত ৫ শতাংশ চর্বি শোষণ হতে পারে। যদি ৫ শতাংশের ওপরে চর্বি জমা হয়ে থাকে, তখনই আমরা একে ফ্যাটি লিভার বলে থাকি।
ফ্যাটি লিভার স্বাভাবিক থাকলে অর্থাৎ লিভার অ্যানজাইমগুলো যদি না বেরিয়ে থাকে, লিভারে কোনো প্রদাহ না থাকলে তাকে স্বাভাবিক ফ্যাটি লিভার বলা হয়। তবে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভারে প্রদাহ হলে তাকে বলে স্ট্যাটো হেপাটাইটিস। অর্থাৎ ফ্যাটি লিভারের কারণে তার প্রদাহ হয়েছে।
এ ছাড়া থাইরয়েড হরমোনে কোনো সমস্যা থাকলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। ডায়াবেটিস ওজন আধিক্য, চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।