জুমবাংলা ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গায় বিয়ের আসরে খাবারে মাংস বেশি খাওয়া নিয়ে বিতণ্ডার জেরে যে দম্পতির মধ্যে তালাক হয়ে গিয়েছিল, সেই বর-কনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবার পালিয়ে নিজেরা বিয়ে করে নিয়েছেন। বর সবুজ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, বিয়ের দিন যা ঘটেছে, তাতে আমাদের দু’জনের তো কোন দোষ নেই। বিয়ে বাড়িতে একদুই কথা হয়। কিন্তু সেটা যে এতদূর চলে যাবে, তা ভাবি নাই। আমরা নিজেরাই বিয়ে করেছি। এখন ভালো আছি। খবর বিবিসি’র।
এর আগে, গত রবিবার চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার বদরগঞ্জ দশমিপাড়ার রহিম আলীর ছেলে সবুজের সঙ্গে একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে সুমি খাতুনের বিয়ে হয়। তবে মাংস বেশি খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষের পর ওইদিন রাতেই দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে বিয়ে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামের মিঠু মিয়া জানায়, বরপক্ষের লোকজন ভাত না খেয়ে বারবার শুধু মাংস চাচ্ছিলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারি হয়। পরে বিয়ের রাতেই অনুষ্ঠানে বরপক্ষের লোকজনকে মারধর করার কারণে নববধূকে তালাক দিয়েছেন বর।
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান বলেন, বিয়ে বাড়িতে বারবার মাংস চাওয়ায় কনেপক্ষের লোকজন বরপক্ষের তিনজনকে পিটিয়েছেন। ওই দিন রাতেই দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটে। পরদিন সোমবার কোনো একসময় নববধূ সঙ্গে সবুজের আবারও বিয়ে হয় ।
জানা গেছে, সুমি খাতুনের সঙ্গে সৌদি আরব প্রবাসী সবুজ আলীর বিয়ে হয় দুই বছর আগে। সেই সময় তিনি সৌদি আরবে থাকলেও টেলিফোনের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। গত রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বউ তুলে নিয়ে আসার কথা ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই গণ্ডগোল হওয়ার কারণে তাদের তালাক হয়ে যায়।
তবে বর সবুজ আলীর দাবি, মাংস নিয়ে না, হাত ধোয়া নিয়ে কথাবার্তার জের ধরে ঘটনাটা ঘটেছে। তারপর কী থেকে কী হয়ে গেল, বুঝলাম না। যাদের কারণে ঝামেলা হয়েছে, তারা ঘনিষ্ঠ কোন স্বজন নন।
আলী আরও বলছেন, সেই ঝামেলার পর যখন দুই পরিবারের মুরুব্বি, গ্রামের মাতবর মিলে বৈঠকে বসেন, সেই সময়েও তিনি চেয়েছেন যে, তার স্ত্রীকে তিনি বাড়িতে নিয়ে যাবেন। কিন্তু তার শ্বশুর রাজি হননি। তবে সেদিন রাতে তিনি ঘুমাতে পারেননি।
সবুজ আলী বলছিলেন, ঝগড়ার সময় আমার কথা কেউ শোনেনি। আমি তখনি বলছিলাম, আমার বউকে আমি নিয়ে যাব। আমি বাড়িতে এসে রাগে বাসর ঘরের ফুল-টুল সব ছিঁড়ে ফেলছি। সারারাত ঘুমাতে পারি নাই, কান্নাকাটি করছি। পরের দিন সকালে মেঝ ভাবির ফোনে আমার ওয়াইফ ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করতে শুরু করে। সে বলে আমি থাকব না, আমি চলে আসব।
তিনি জানান, আমি অনলাইনে, ফেসবুকে এরকম ঘটনার কথা শুনেছি, কিন্তু আমার জীবনেই যে এরকম একটা ঘটনা ঘটবে, কখনো ভাবি নাই। সেদিন সন্ধ্যার সময় একটি মোটরসাইকেলে করে তারা মেয়েকে নিয়ে আসেন। তারপর একটি কাজী অফিসে তারা আবার বিয়ে করে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এদিকে কনে সুমি খাতুন বলছিলেন, সেদিন তার খুব খারাপ লাগছিল। সারারাত কান্নাকাটি করছিলেন। স্বজনরা তাকে বোঝাচ্ছিলেন যে, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছি। তার অভিমানও হয়েছিল, কিন্তু তিনি বারবার বলেছেন, আমি ওর (সবুজ আলী) কাছে যাব।
তিনি বলেন, আমি সকালে হ্যালো কওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেও কানতে (কান্না করতে) শুরু করলো, আমিও কানতে শুরু করলাম। আমি কইলাম, আমি তোমার কাছে আজকেই চলে আসব। পরে সন্ধ্যায় এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।