বিনোদন ডেস্ক : মাত্র ৪ হাজার টাকা পাওয়ার শর্তে একটা সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হতেন তাপস পাল! পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগের দিনগুলোতে এভাবে জীবনযাপন করেছেন বাংলা চলচিত্রের কিংবদন্তি এই অভিনেতা।
গত মঙ্গলবার ভোরে মারা যান তাপস পাল। শনিবার তাকে নিয়ে ভারতের সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় লিখেছেন দেশটির জনপ্রিয় সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য। গৌতম মূলত ক্রীড়া সাংবাদিক। একই সঙ্গে আবার বিনোদন সাংবাদিকতায় বহুল পরিচিত। ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গনে সৌরভ গাঙ্গুলি যেমন তার বন্ধু, তেমনি সিনেমার প্রসেনজিৎ থেকে তাপস পালের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল দারুণ। ক্যারিয়ারের অনেকটা সময় খুব কাছ থেকে তাপসকে দেখা গৌতম তার লেখায় প্রয়াত অভিনেতার শুরু থেকে শেষ জীবন তুলে ধরেছেন।
গৌতম লিখেছেন, ‘তখনো রাজনীতিতে পাকাপাকি আসেনি তাপস। তৃণমূলকে সমর্থন শুধু জানিয়ে রেখেছে। প্রবল অর্থসংকট দেখা গিয়েছিল তখন। হঠাৎ করে মুদিয়ালির বাড়ি থেকে কিছুদিনের জন্য উধাও হয়ে গেল। আর রোজ বসে থাকত সাউথ ক্লাবে। কলকাতা টেলিফোনসের কর্তা বিবেক লাহিড়ীর সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটত। লাহিড়ীদা একদিন বললেন, আপনার বন্ধু কী করছেন শুনুন!’
‘কোনো এজেন্টের সঙ্গে চুক্তিতে সই করেছে ২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে গিয়ে ৮৮ হাজার টাকা পাবে!’
ঘটনাটি শুনে গৌতম তাপসকে কিছু বলতে চেয়েও পারেননি। অনুষ্ঠান প্রতি মাত্র ৪ হাজার টাকায় তিনি অতিথি হতে পারেন তা ভেবে অবাক হন।
গৌতম জানিয়েছেন, ক্যারিয়ারের একটা পর্যায়ে তাপস পালকে কোনো পরিচালক সিনেমায় অফার করতেন না। এর কারণ হিসেবে ‘ব্যক্তি’ তাপসের আচরণকে দায়ী করেছেন তিনি। কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না। ফোন করে দুই মিনিট কথা পর্যন্ত বলতেন না।
অর্থাভাব দূর করতে তাপস এক সময় রাজনীতিতে সক্রিয় হন। আর সেটাই তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। রাগের মাথায় একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্য করে শিরোনাম হন। ভুয়া একটি কোম্পানির সঙ্গে জড়িয়ে যায় তার নাম। মমতাকে শায়েস্তা করতে ক্ষমতাসীন বিজেপি তখন তাপসকে টার্গেট করে।
আর্থিক সুবিধা নেওয়া ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় ১ বছর এক মাস জেলে থাকার পর ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কটকের ঝাড়পদা জেল থেকে মুক্তি পান। বন্দিদশাতেই শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সেখান থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।