জুমবাংলা ডেস্ক : পশুপাখি আমরা অনেকেই পুষি। কিন্তু জঙ্গলের পশুপাখিদের কথা কি ভাবে আমাদের এই সভ্যতা। চা বাগানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির দল। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে চিতা বাঘ। রাতের অন্ধকারে অজানা জন্তুর আতঙ্ক। অথবা সাপের উপদ্রব। এসব হচ্ছে কেন? কেন আচমকা বন্যপ্রাণীদের উপদ্রব এত বাড়ছে? পরিবেশবিদরা অবশ্য এর জন্য মানুষকেই দুষছেন। বলছেন আসলে আমরাই তো ওদের ঘরে ঢুকে ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছি। আর আমাদেরই তার মাসুল দিতে হচ্ছে।
বন্যপ্রাণ, ওয়াইল্ড লাইফ। গালভরা শব্দগুলো খাতায় কলমে যতটা কার্যকর বাস্তবেও কী ততটাই কার্যকর? আজকাল বড্ড উঠছে প্রশ্নটা। খাদ্য খাদক সম্পর্ক, বাস্তুতন্ত্র অথবা পরিবেশরক্ষা, এই শব্দগুলো ভূগোলের বইয়ে অথবা সরকারি প্রকল্পে যুগ যুগ ধরে রয়েছে। আর সবকিছুর বারোটা বাজিয়ে দেয়া মানুষ মাঝে মাঝে টের পাচ্ছে আধুনিক সভ্যতার রেজাল্টটা।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড ফান্ডের পরিসংখ্যান বলছে, সভ্যতার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত পৃথিবারী ৮৩% স্তন্যপায়ী এবং ৫০% উদ্ভিদ ধ্বংস করে ফেলেছে মানুষ। প্রায় ৩০০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীকে স্রেফ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে পৃথিবী থেকে মুছে দিয়েছি আমরা। ১৯৭০ সালে সারা পৃথিবীতে যত স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ ও মাছ ছিল, আজকের দিনে ৬০ ভাগই পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে কেবল মাত্র মানুষের জন্য।
সভ্যতা আধুনিক থেকে আরও আধুনিক হচ্ছে। জনবসতি বেড়েই চলেছে। সঙ্গে চোরাকারবারীদের চক্র। জঙ্গল কমছে। আজ জঙ্গলের অধিবাসীরা? সুন্দরবনে একশো বাঘের খবরে যতটা না উৎসাহ, তার চেয়ে বেশি উদ্বেগও। জঙ্গল তো কমছে। বাঘেরা থাকবে কোথায়? সুন্দরবন, যা কিনা পরিবেশের ফুসফুস, সেই সুন্দরবনের কোর এরিয়ার জঙ্গলও নাকি সাফ হয়ে যাচ্ছে। খাদ্যের অভাবে বাঘেরা হানা দিচ্ছে লোকালয়ে, বাঘ ও মানুষের লড়াইয়ে মানুষই জিতছে, আসলে মানুষ হারছে। বন্যপ্রাণ রক্ষা না করতে পারলে সভ্যতাও যে বিপন্ন, কে বুঝছে সেটা! এমনটাই মত ব্যাঘ্রপ্রাণ বিশেষজ্ঞ জয়দেব কুন্ডুর।
মানব সভ্যতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত প্রাণী হারিয়ে গিয়েছে, তারা আর ফিরে আসবে না। বন্যপ্রাণ আর প্রকৃতির যে ধ্বংসলীলা চলছে, তাতে মানব সভ্যতারও শেষের শুরু…বলছেন পরিবেশবিদরাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।