জুমবাংলা ডেস্ক : হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক কিশোরী রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠছে। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেপ্লেক্সে। এ ঘটনায় গত শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মামুনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে। এতদিন বিষয়টি ধামা চাপা দেবার অভিযোগ উঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে এ ঘটনা ৮ দিন পর তদন্তের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে কর্তপক্ষ। ১১ সেপ্টেম্বও ধর্ষণের রাতে সাটুরিয়া হাসপাতালে ওই রাতে যারা ডিউটি করেছে তারা হলেন, ডা. স্বপন কুমার সুর, নার্স দুলালী ও সুমি আক্তার, ওয়ার্ড বয় মাজেদ।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৫ বছরের ওই কিশোরীকে জ্বার ও শরীর ব্যাথা নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠলে তাকে ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র (ছুটি) দেয়া হবে বলে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে নার্স তার পরিবারকে জানায়। ১১ সেপ্টেম্বর রাত আনমানিক ১১ টার দিকে হাসপাতালের এক যুবক তাকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ধর্ষিতার মা বলেন, ঘটনার দিন মেয়েকে বেডে না পেয়ে খোজাখুজি করে বারান্দায় পরে থাকতে দেখি। তখন ঐ তরুণীর রক্তক্ষণ হচ্ছে দেখে বিষয়টি তিনি নার্সকে বলি। কর্তব্যরত নার্স কিশোরীর অবস্থা বেগতিক দেখে ডাক্তার ডেকে আনেন। পরে তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শষ্যা হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে আমার মেয়েকে এক আত্বীয় বাড়িতে রাখা হয়েছে।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, ধর্ষককে আমরা চিনিনা। তবে হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে ধর্ষককে চেনা যাবে। মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করে মুখ বুঝে চুপ রয়েছি, অভিযোগ করিনি। ওই সময় ডাক্তার বা নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি। তারা নিশ্চয় ধর্ষকের ব্যাপারে তথ্য দিতে পারবেন।
এই ঘটনার নিয়ে কয়েকদিন ধরেই সাটুরিয়া হাসপাতাল পাড়ায় কানঘুষা চলছে। সিসি ক্যামেরা বেষ্টিত রোগীর বেডে কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে উঠেছে পশ্ন। হাসপাতালের রোগী ও স্থনীয় মানুষ জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন অনেক নারী। তাদের নিরাপত্তা হাসপাতাল রয়েছে সিসি ক্যামেরায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করলেই ধরা পরবে ওই মেয়েকে কে ধর্ষণ করেছে। তারা অভিযোগ করে বলেন হাসপাতাল কর্কৃপক্ষ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না দেখে তরুণীর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ায় চেষ্টা করছেন। তবে ঘটনার ২ দিন পর থেকে ঐ রাতে ডিউটিরত ওয়ার্ড বয় মাজেদ ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে আছেন।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, এ ঘটনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিককে প্রধান করে গত শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। দুই কর্ম দিবসে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে ভিতরে এ ঘটনা যেই ঘটাক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা তরুণীর ধর্ষণের ঘটনাটি খুবই নিন্ধনীয়। আশা করি তদন্ত কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন পেশ করবেন এবং অপরাধীকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।