আশরাফুল মামুন : যে বয়সে একটি শিশুর ঠিকমতো ডান-বাম বোঝার কথা না, ঠিক সেই বয়সে ভারি যান চালাচ্ছে মোহাম্মদ আরিয়ান মুখারিজ বিন দাতু মো: মিজান নামের এক বিস্ময় বালক। তার বয়স এখন ৮ হলেও সে এই যান চালানো শিখেছে মাত্র ৫ বছর বয়সে।
মোহাম্মদ আরিয়ান নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত ইস্কাভেটর (ভেকু), ৩০-৪০ তলা উচু টাওয়ার ক্রেন, পেলোডার, রোড রোলারসহ আরো অন্যন্যা ভারি যন্ত্রপাতি চালানো রপ্ত করেছে। যেখানে এসব ভারি যন্ত্রপাতি বড়দেরও সতর্ক হয়ে ড্রাইভ করতে হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু আরিয়ান নিখুঁতভাবেই পরিচালনা করছে এসব ভারি যানবাহন। সে এখন মালয়েশিয়ার একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। যাকে মালায় ভাষাতে বলে স্কলাহ রেনডাহ কেবাংসান। পড়ার পাশাপাশি কর্মেও দুর্দান্ত মেধার স্বাক্ষর রাখছে আরিয়ান।
বিস্ময় বালক আরিয়ানের বাবা বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলায় জম্মগ্রহণকারী মালয়েশিয়ার স্থায়ী নাগরিক শিল্পপতি দাতু মো: মিজান। আরিয়ানের মা একজন মালয়েশিয়ান নাগরিক এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। পরিবারের অভাব ঘোচাতে আজ থেকে ২৭ বছর আগে শূন্য হাতে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান দাতু মিজান। সেখানে গিয়ে সাধারণ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। হাড়ভাঙ্গা কঠোর পরিশ্রমে মিজানের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কঠোর পরিশ্রমে ভাগ্য তাকে সফলতার শিখরে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দাতু মো: মিজানের কনস্ট্রাকশন কোম্পানি মালয়েশিয়ার অন্যতম এ-ওয়ান কোম্পানি। দাতু মিজানের কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে হাজার হাজার বাংলাদেশী কাজ করছেন।
পরিবারের সাথে আরিয়ান থাকে রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে কেলান্তন কুতাবারু রাজ্যে। আরিয়ান তার বাবা-মায়ের দ্বিতীয় ছেলে। স্বভাবে শান্ত হলেও যান চালানোও বেশ দক্ষতা রয়েছে তার।
এ বিষয়ে আরিয়ানের বাবা দাতু মো: মিজান জানান, সে আজ থেকে ৩ বছর আগে আরিয়ানকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন সাইড পরিদর্শন করতেন। তখনই আরিয়ান এসব ভারি যন্ত্রপাতি দেখে এগুলো পরিচালনা করার আগ্রহ দেখায়। বয়স খুবই কম তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রথমে রাজি হতে চাননি তিনি। কিন্তু একটা সময় ছেলের প্রবল আগ্রহ দেখে রাজি হন।
দাতু মিজান বলেন, তখন দেখলাম সে একটি যন্ত্র পরিচালনা শুধু একবার দেখিয়ে দিলেই রপ্ত করে নিচ্ছে। এরপর সে ৫ বছর বয়সেই একাধিক ভারি যানবাহন পরিচালনা শিখে নিয়েছে।
দাতু মো: মিজান আরো বলেন, আমার পরে এই মিজান গ্র্যান্ড ইন্টারট্রেডার্স এসডিএন বিএইচডির হাল তাকেই ধরতে হবে। আমি চাই সে পড়াশোনা শেষ করে প্রাপ্তবয়সে অভিজ্ঞ হয়ে শক্ত হাতে এই কোম্পানির হাল ধরবে। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।