জুমবাংলা ডেস্ক : পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। পেঁয়াজ রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। এক রাতের ব্যবধানে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
সন্তোষজনক মজুতের কথা বললেও ভারত বাদে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে সরকার। সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে তিন লাখ ৬৪ হাজার কেজি পেঁয়াজ। কনটেইনারে করে আমদানি করা এসব পেঁয়াজ খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। মিসর ও চীন থেকে এসব পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সোমবার পর্যন্ত টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে তিন হাজার ৫৭৩ টন। খালাসের অপেক্ষায় আছে পেঁয়াজভর্তি ১৫টি ট্রলার।
মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হলেও এখনও স্থানীয় বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমেনি। অতিরিক্ত মুনাফালোভীরা যে যার মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে পেঁয়াজ।
দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জ থেকে একপ্রকার উধাও হয়ে গেছে পেঁয়াজ। ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ হওয়ার বিষয়টি জানার পর খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানিকারকদের সিদ্ধান্ত না জেনে পেঁয়াজ বিক্রি করবেন না তারা। এর মাঝে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লাফ দিয়ে বাড়ে পেঁয়াজের দাম।
টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, গত কয়েক সপ্তাহ থেকে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে তিন হাজার ৫৭৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। খালাসের অপেক্ষায় হাজারের অধিক টন পেঁয়াজ ভর্তি ট্রলার বন্দর ঘাটে নোঙর করে আছে। পেঁয়াজভর্তি আরও একাধিক ট্রলার স্থলবন্দরের পথে মিয়ানমার থেকে রওনা দিয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরকেন্দ্রিক আমদানিকারকরা অভিযোগ করেছেন, শ্রমিক অপর্যাপ্ততার কারণে পেঁয়াজবোঝাই ১০-১২টি ট্রলার এখনো বন্দরে নোঙর করে আছে। শ্রমিক সংকটের কারণে পেঁয়াজগুলো ট্রলার থেকে খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য বন্দরের শ্রমিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজগুলো স্থানীয় বাজারে চাহিদা মেটানোর পর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। সেখান থেকে একাধিক হাত বদল হয়ে পেঁয়াজ সরবরাহ হবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমারের রফতানিকারকরা টনপ্রতি গড় দাম ৩৫ হাজার টাকায় টেকনাফ স্থলবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছে। আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করে মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ টেকনাফ বন্দর কার্যক্রম শেষ পর্যন্ত কেজিপ্রতি গড় দাম দাঁড়ায় ৩৫ টাকা। কিন্তু টেকনাফের স্থানীয় বাজারে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম হাঁকাচ্ছেন ৮০ টাকা। কক্সবাজার শহর, বৃহত্তর ঈদগাঁও বাজারসহ প্রসিদ্ধ বাজারগুলোতে ১০০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে পেঁয়াজের কেজি।
টেকনাফ পাইকারি বাজারের হারুন সওদাগর, নবী সওদাগরসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বন্দরের আমদানিকারকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি ৭০ টাকায় কিনছি। টেকনাফ বাজারে এনে ১০ টাকা লাভে ৮০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। তবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসার পর দাম কমবে।
সাধারণ ক্রেতারা জানান, মিয়ানমার থেকে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি হলেও অদৃশ্য কারণে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছে না। মিয়ানমার থেকে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে তাতে পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা পেরোনোর কথা নয়। অথচ ওসব পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।
ঈদগাঁও কলেজ গেট এলাকার ব্যবসায়ী শাহ আলম সওদাগর বলেন, দুদিন আগেও ৫০ টাকায় পেঁয়াজ কিনেছি। সোমবার পেঁয়াজ আনতে গিয়ে দেখি পাইকারি দাম চাচ্ছে ১০০-১১০ টাকা। ফলে পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে এসেছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।