জুমবাংলা ডেস্ক : ঝালকাঠির নলছিটিতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধুসহ চার মুক্তিযোদ্ধার ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে নলছিটি উপজেলার ষাইটপাকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পাশের একটি খাল থেকে ভাঙাচোরা ম্যুরাল চারটি উদ্ধার করে।
শনিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা ভাস্কর্যের বিভিন্ন স্থান ও বঙ্গবন্ধুসহ চার মুক্তিযোদ্ধার ম্যুরাল ভাঙচুর করে। ভেঙে ফেলা ম্যুরাল চারটি পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারনা করছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
এ নিয়ে ষাটপাকিয়া বাজারে সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে মুক্তিযোদ্ধাদের এক প্রতিবাদ সভায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনকারী মৃত মফিজ উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া নিজের মতো করে সড়ক বিভাগের রাস্তার ত্রি মোহনায় কয়েকটি ম্যুরাল তৈরি করেন। মুক্তিযোদ্ধা মফিজ আওয়ামী লীগের লোক ছিলেন না। মসজিদ সংলগ্ন এরকম কিছু স্থাপনা নির্মাণ করায় স্থানীয় মুসল্লিরাও ভালো চোখে দেখেননি।’
ভৈরবপাশার এই চেয়ারম্যান আরও বলেন, “মুসল্লিরা মফিজ উদ্দিনকে ম্যুরাল নির্মাণ না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে তিনি এই আহ্বানে কান না দিয়ে নিজের খেয়ালমতো সরকারি কিছু অনুদান নিয়ে এবং নিজ উদ্যেগে ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নাম দিয়ে ম্যুরাল তৈরি করেন।’ তবে রাতের আঁধারে ম্যুরাল ভাঙাকে তিনি অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ বলে অভিহিত করেন। এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিও জানান ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহম্মেদ।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহম্মেদের এই বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ময় ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা মফিজের ছেলে মাসুম হাওলাদার বলেন, ‘রাতের আঁধারে কে বা কারা ভেঙেছে জানি না। তবে যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিচার দাবি করছি।’
ঝালকাঠি সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা মফিজের উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। কিন্তু তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের না জানিয়ে করায় তাদের ক্ষোভ ছিল। ম্যুরালগুলো সঠিকভাবে তৈরি করা না হলেও ম্যুরালগুলো ভাঙা ঠিক হয়নি।’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ওই বাজারের নৈশপ্রহরীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সে কিছু বলতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধা মফিজের ছেলে মাসুম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।