জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে নসিমন উল্টে নিহত আট পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিহত ১৫ জনের মধ্যে আটজনের বাড়ি একই গ্রামে। তাদের মরদেহ আনার পর বালিয়াদিঘী গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনদের আহাজারিতে দেখতে যাওয়া মানুষদের চোখেও নেমে আসে পানি। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে ধান কেটে বাড়ি আসার পথে নসিমনে থাকা ১৫ জন শ্রমিক সড়কের ধারে গর্তে উল্টে পড়েন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত আটজনের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।
নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার শিবপুর চৌরহাট গিরিসা গ্রামে ২২ দিন আগে অন্যের জমিতে শ্রমিক হিসেবে ধান কাটতে যান তারা। বুধবার রাত ১২টায় সেখান থেকে সবার পারিশ্রমিকের প্রায় দেড়শ মন ধান নিয়ে নসিমনে বোঝাই করে সেই নসিমনেই চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। বৃহস্পতিবার ভোরের আলো না ফুটতেই ভাঙ্গা সড়কে নসিমনের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশে গর্তে পড়ে যায়। নিভে যায় জীবনের আলো। ধানবোঝাই নসিমনের নিচে চাপা পড়ে মারা যান ৭ জন। পরে আরো একজনসহ ৮ জন প্রাণ হারান।
নিহত আহাদের মা তৈফুল বেগম ও মিঠুনের স্ত্রী বলছিলেন, ৩০ মিনিট আগেও ফোন করে আহাদ ও মিঠু জানায় কয়েক মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবো বাড়ি।
নিহতদের মধ্যে কিশোর মিজানুর রহমান মিলু, মিঠুন ও আহাদের বিয়ে হয়েছিল কয়েক মাস আগে। আসমা, আমেনা বেগম ও মিঠুনের স্ত্রী- তিনজনই অন্তঃসত্ত্বা। মুহূর্তের ঘটনায় স্বামী হারিয়ে তারা হয়ে গেলেন বিধবা। শোকে কাতর তারা। এদের পরিবারের মা, দাদি ও স্ত্রীরা কাঁদতে কাঁদতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউপির বালিয়াদিঘী গ্রামে কবরস্থানে জানাজার জন্য একের পর এক মরদেহগুলো নিয়ে যাওয়ারর সময় মনে হচ্ছিল যেন লাশের মিছিল। সাতজনের বসবাস একই এলাকায়। তাদের জানাজা, কবর একই জায়গায়। পাশাপাশি কবর দেয়া হয় সাতজনকে। বাড়ি থেকে ২২ দিন আগে বারিয়াদিঘী গ্রামের ১৫ জন একসাথে ৭৩ কিলোমিটার দূরে গিয়েছিলেন শ্রমিক হিসেবে ধান কাটতে। তারা একইসঙ্গে ফেরার পথে বাড়ি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে প্রাণ হারায় বাবা-ছেলেসহ আটজন।
নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয় বলে জানান শিবগঞ্জের ইউএনও সাকিব আল রাব্বী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।