জুমবাংলা ডেস্ক : রাত তখন আনুমানিক পৌনে তিনটা। যাত্রীদের অনেকেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ বিকট শব্দে সবার ঘুম ভেঙে যায়। মনে হয়েছিল যেন শক্তিশালী কোনো বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। মুহূর্তেই পুরো ট্রেন অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ভেতর থেকে বের হওয়ার রাস্তাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
ব্রাক্ষ্মবাড়ীয়ার ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) হাসপাতালের বেডে থেকে এভাবেই মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখার সময়টির বর্ণনা করছিলেন।
সিলেটে মাজার জিয়ারত শেষে মা, স্ত্রী, মেয়ে, ভাগ্নে বউসহ পরিবারের ৫ জনকে নিয়ে একই ট্রেনে বাড়িতে ফিরছিলেন চাঁদপুরের হাইমচরের ঈশানবালা গ্রামের জাহাঙ্গীর।
তিনি বলেন, ‘মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, কারও পা নেই, কারও মাথা থেকে মগজ বেরিয়ে গেছে। চোখের সামনেই অনেককে মারা যেতে দেখেছি। পরিবারের বাকি ৪ সদস্য কোথায় আছে, বেঁচে আছে কি-না তাও জানি না।’
‘দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেন থেকে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। জখম গুরুতর হওয়ায় পরে সেখান থেকে আমাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়,’ বলেন তিনি।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার আহতদের দেখতে হাসপাতালে আসলে তিনি পরিবারের অন্য ৪ সদস্য বেঁচে আছে কিনা, কিংবা কোথায় আছে তা খুঁজে বের করার অনুরোধ করেন।
কান্নারত মেয়ে শিশুটির পরিচয় পাওয়া গেছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা আহত লোকজনদের মধ্যে একটি কন্যা শিশুকেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আতঙ্কগ্রস্ত শিশুটি নিজের নাম বলতে পারছিল না। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তার অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া গেছে।
শিশুটির নাম মাইমা। তার চাচা মানিক জানিয়েছেন, শিশু মাইমাকে নিয়ে সিলেট থেকে তার মা কাকলী বেগম ও দাদী রহিমা বেগম উদয়ন এক্সপ্রেসে করে চাঁদপুরে ফিরছিলেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হয় তাদের ট্রেন। মা কাকলি বেগম এখনো নিখোঁজ। তাদের বাড়ি চাঁদপুরের হাইমচরে।
মানিক জানান, মাইমার বাবা মাইনুদ্দিনও দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।