মেছতা সম্পর্কে যা কিছু জানা জরুরি

জুমবাংলা ডেস্ক : মেছতা বা মেলাসমা ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা। বেশিরভাগ সময় মুখের ত্বকেই দেখা দেয় এই চর্মরোগ। মেছতা হলে মুখ, থুতনি, কপালে ও গালে হালকা বাদামি, কালো বা লালচে ছোপ দেখা যায়। চল্লিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে মেছতা হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়।

কেন হয়?
বিভিন্ন কারণে নারীরা মেছতায় আক্রান্ত হতে পারেন। জিনগত প্রভাব, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি, গর্ভাবস্থা, হরমোন থেরাপি, প্রসাধনী, ফটোটক্সিক ওষুধ এবং খিঁচুনি প্রতিরোধী ওষুধ মেছতার কারণ হতে পারে। গর্ভধারণের সময় হরমোনের প্রভাবে অনেক সময় মুখে মেছতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য রোগটিকে অনেকে বলেন, ‘মাস্ক অব প্রেগনেন্সি।’ মেনোপজের পর এটি বেশি হতে দেখা যায়, তার পেছনেও হরমোনের কারণই দায়ী। আবার জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়ার কারণেও অনেক সময় মেছতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি টেলিভিশন, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং ট্যাবলেটের এলইডি আলোর কারণে হতে পারে মেছতা।

আমাদের ত্বক তিনটি স্তর দিয়ে তৈরি। বাইরের স্তরটি হল এপিডার্মিস, মাঝখানের স্তরটি হল ডার্মিস এবং সবচেয়ে গভীর স্তরটি হল সাবকিউটিস।এপিডার্মিসটিতে মেলানোসাইট নামক কোষ রয়েছে যা মেলানিন নামে পরিচিত একটি গাঢ় রঙ (রঙ্গক) সঞ্চয় করে এবং তৈরি করে। আলো, তাপ, বা অতিবেগুনী বিকিরণের প্রতিক্রিয়ায় বা হরমোনের উদ্দীপনার মাধ্যমে, মেলানোসাইটগুলি আরও মেলানিন তৈরি করে এবং সেই কারণেই ত্বকের রঙ বদলে যায়।

মেছতা কয় ধরনের হয়?

তিন ধরনের মেছতা রয়েছে। একটি হচ্ছে এপিডার্মাল। গাঢ় বাদামি রঙের এই মেছতা একটি সুনির্দিষ্ট অংশে হয় এবং চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায় দ্রুত। ডার্মাল মেলাসমা বা মেছতা চিকিৎসায় ভালো সাড়া দেয় না। আরেকটি হচ্ছে মিশ্র মেলাসমা, যা তিনটির মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ। এ ধরনের মেছতাও সাধারণত চিকিৎসায় দ্রুত ভালো হয়ে যায়।

মেছতা হলে কী করবেন?
মেছতার সমস্যা শনাক্ত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। হাইড্রোকুইনোন–সমৃদ্ধ ব্লিচিং ও ভিটামিন এ যুক্ত ক্রিম অনেক সময় ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। আবার অ্যাজেলাইক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ক্রিম, লোশন বা জেল লাগাতে দেওয়া হয় আক্রান্ত স্থানে। তবে অবস্থা দেখে চিকিৎসকই ঠিক করবেন জে কোনটা আপনার জন্য উপযুক্ত।

প্রতিরোধে কী করবেন?
যদি গর্ভাবস্থা বা জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়ার কারণে মেছতা হয়, তবে এটি সাধারণত নিজ থেকেই চলে যায়। অর্থাৎ সন্তান জন্মদানের পর এবং ওষুধ বন্ধ করার পর ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ী মেছতা প্রতিরোধে অবশ্যই সান প্রটেকশন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া হরমোনের সমস্যা থাকলে শনাক্ত করে চিকিৎসা নিন।