বিয়ের পর একজন নারীর জীবনে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়—নতুন পরিবেশ, নতুন পরিবার এবং ভিন্ন রকম সামাজিক প্রত্যাশা। এই পরিবর্তনগুলো মানিয়ে নিতে অনেক নারী মানসিক চাপে ভোগেন। বিশেষ করে পরিবারের সদস্য, স্বামী এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চাপ, নিজের পরিচয় বজায় রাখার চেষ্টা এবং নতুন ভূমিকার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অনেক সময় মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
তবে কিছু সহজ, বাস্তবমুখী এবং সম্পর্ক-বান্ধব উপায় মেনে চললে এই চাপ অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব।
Table of Contents
১. পারস্পরিক সম্মান ও যোগাযোগের চর্চা
নতুন পরিবারে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথম ধাপ হচ্ছে খোলামেলা ও সম্মানজনক যোগাযোগ। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলা, নিজের অনুভূতি স্পষ্ট করা এবং অন্যদের কথাও মনোযোগ দিয়ে শোনা পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে তোলে।
মন খুলে কথা বলুন, কিন্তু সম্মান বজায় রেখে
ব্যক্তিগত সীমারেখা দৃঢ়ভাবে কিন্তু নম্রভাবে নির্ধারণ করুন
২. শ্বাসপ্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রিত ব্যায়াম
শরীর ও মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে নিয়মিত ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছেড়ে দেওয়ার ব্যায়াম খুবই কার্যকর। এটি নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করে এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
উদাহরণ: প্রতিদিন ৫ মিনিট “৪-৭-৮” শ্বাস পদ্ধতি চর্চা করুন
৩. আত্মীয়স্বজনের মন্তব্য হালকা করে নিন
বিয়ের পর অনেক নারী আত্মীয়দের মন্তব্য—যেমন পোশাক, রান্না, কাজের ধরণ নিয়ে—নিয়ে ভীষণ চাপ অনুভব করেন। মনে রাখা জরুরি, সব মন্তব্যই সমালোচনা নয়। তবে যদি কোনো মন্তব্য আপনাকে কষ্ট দেয়, সেটি নিয়ন্ত্রণের জন্য:
নিজেকে দোষ না দিয়ে বাস্তবতা বুঝুন
প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সেলিং নিন
৪. সহানুভূতির চর্চা করুন, সহানুভূতি চান
শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দৃষ্টিকোণ বুঝতে চেষ্টা করলে সম্পর্ক উন্নত হয়। একইসঙ্গে আপনার নিজের অবস্থাও সম্মানসহ জানানো দরকার।
“আমি বুঝি আপনি এটা কেন বলছেন, তবে আমার জন্য এটা একটু কঠিন”—এই ধরণের ভাষা সম্পর্কের মধ্যে ইতিবাচকতা আনে
৫. নিজেকে সময় দিন
দায়িত্ব পালনের মাঝে নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখুন। সেটি হতে পারে ১৫ মিনিট বই পড়া, চুপচাপ বসে থাকা বা নিজের পছন্দের গান শোনা।
৬. পেশাদার সহায়তা নেওয়াকে স্বাভাবিক করুন
যদি আত্মীয় বা পরিবারের প্রত্যাশা, তর্ক বা অব্যক্ত মানসিক চাপ দীর্ঘমেয়াদি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে পেশাদার কাউন্সেলিং আপনার আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিতি ফিরিয়ে আনতে পারে।
বিয়ের পর একজন নারীর জন্য মানসিক চাপ একেবারেই অস্বাভাবিক নয়, বিশেষ করে যদি পরিবারের প্রত্যাশা ও সম্পর্কগুলো কষ্টকর হয়ে ওঠে। তবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, নিজের অনুভূতিকে গুরুত্ব দেওয়া, এবং পজিটিভ রুটিন মেনে চললে এই চাপ অনেকটাই কমানো যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজেকে ভালোবাসা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।