মেসির ৭০০, এমবাপের ২০০
স্পোর্টস ডেস্ক : সময়ের সেরা দুই তারকা লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে ক্লাব ফুটবলে গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। মেসি ক্লাব ফুটবলে ‘৭০০’ গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। আর এমবাপে পিএসজির হয়ে ‘২০০’ গোল করেছেন। রবিবার রাতে ফরাসি লিগ ওয়ানের ম্যাচে এমবাপে জোড়া গোল করে এ কৃতিত্ব দেখান। আর মেসি এক গোল করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর সাতশ’ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। দুই সুপারস্টারের জ্বলজ্বলে নৈপুণ্যে ভর করে স্বাগতিক মার্শেইকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সফরকারী প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন (পিএসজি)।
ম্যাচের ২৫ মিনিটে এমবাপের গোলে এগিয়ে যাওয়ার চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। বিরতির পর দলকে তৃতীয় গোল এনে দেন এমবাপে। মেসির গোলটি হয়ে থাকে রেকর্ডময়। ক্লাব ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ৭০০ করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা। এই ৭০০ গোলের ৬৭২টি তিনি করেছেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে, বাকি ২৮টি পিএসজির হয়ে। ক্লাব ফুটবলে সাতশ’ গোল মেসি ছাড়া আর আছে একজনেরই। তিনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
বর্তমানে পর্তুগিজ মহাতারকার ক্লাব গোল সংখ্যা ৭০৯টি। ম্যাচে প্রতিশোধের ঝাঁজ নিয়ে নেমেছিল পিএসজি। চলতি মাসেই ফরাসি কাপে পিএসজিকে বিদায় করে দিয়েছে মার্শেই। এবার তাদের মাঠে লিগের ম্যাচে বড় জয় নিয়ে ফিরেছে প্যারিসের পরাশক্তিরা।
খেলার শুরুতে গতি ছিল মন্থর। ছন্দ পেতে কিছুটা সময় লাগে মেসিদের। ২৫ মিনিটে আসে জ্বলে ওঠার মুহূর্ত। মাঝমাঠ থেকে মেসির বাড়ানো বল ধরে তীব্র গতিতে ছুটে আড়াআড়ি শটে বল জালে জড়ান এমবাপে। চার মিনিট পর সেই ঠিক উল্টো ব্যাপার। এবার বলের জোগান দেন এমবাপে, জালে জড়ান মেসি। এমবাপে দারুণ এক পাসে বক্সের ভেতর খুঁজে পান মেসিকে। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানো তারকা কোন ভুল করেননি। এতে করে ক্লাবে ৭০০ গোল হয়ে যায় তার।
মজার বিষয় হচ্ছে, এ দু’জনই ২০২২ সালের ফিফা বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। ফিফা বর্ষসেরা অবশ্য কে হয়েছেন তা এতক্ষণে জানা হয়ে গেছে সবার। কেননা গত রাতে প্যারিসে ঘোষণা করা হয়েছে বিজয়ীর নাম। আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ উপহার দেয়া মেসির হাতেই সেরার স্মারক উঠেছে এটা বলাই যায়। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে আরেকটি গোল পেতে পারতেন মেসি। কিন্তু একদম কাছ থেকে ডান পায়ে শট নিতে গিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
৩৮ মিনিটে মার্শেই রক্ষণে আবার আতঙ্ক ছড়ায় পিএসজি। এবার এমবাপের পাস থেকে সুযোগ হাতছাড়া করেন অধিনায়ক মারকুইনহোস। বিরতির পর নেমে একই ধারায় খেলা চালিয়ে দ্রুত আরেকটি গোল পেয়ে যায় পিএসজি। ৫৫ মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে মেসিকে বল দিয়ে বক্সে ঢুকে যান এমবাপে। মেসির দেয়া ফিরতি বল ভলিতে জালে জড়ান ফরাসি তারকা। এই জয়ে ২৫ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও পোক্ত করেছে পিএসজি। শীর্ষে থাকা দলের কাছে হেরে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে মার্শেই।
ম্যাচে জোড়া গোল করে পিএসজির হয়ে গোলের ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন এমবাপে। ২০১৭ সালে মোনাকো থেকে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর ক্লাবটির হয়ে ২৫০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ক্লাবটির হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়া সাবেক সতীর্থ এডিনসন কাভানির পাশে বসাও নিশ্চিত করেছেন ২৪ বছর বয়সী এমবাপে। উরুগুয়েন তারকাকে যে শীঘ্রই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন সেটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে।
ম্যাচ শেষে এমবাপের প্রশংসা করে পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফার গালটিয়ের বলেন, এমবাপে যে শুধু পায়ের কারুকাজে দ্রুত তা নয়, তার কাজের গতিও ধারণার বাইরে। তার মতো খেলোয়াড়রা স্পষ্টত রেকর্ড ও পরিসংখ্যানে অনুপ্রাণিত। অচিরেই সে কাভানিকে ছাড়িয়ে যাবে। ইতোমধ্যে লিগ ওয়ানে নিজের গড়া এক মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন ১৭ গোল করা এমবাপে। মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতায় ২৯ ম্যাচে ২৯ গোল করেছেন কাতার বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয় করা এই সুপারস্টার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।