জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্যপদের পাশাপাশি বসুরহাট পৌরসভার মেয়রের পদ হারাচ্ছেন আবদুল কাদের মির্জা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা রোববার দুপুর ১২টার দিকে তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।
৩৮ মিনিট ১৭ সেকেন্ডব্যাপী লাইভে এসে কাদের মির্জা বলেন, ‘আজ সকাল ৯টার দিকে মোবাইলে একটা কল পেয়েছি। নোয়াখালীর একজন ত্যাগী নেতা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছেন নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নাকি বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন।
‘বড় ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওনাকে বলেছেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) গতকাল (শনিবার) নাকি আমাকে বহিষ্কারের জন্য নেত্রীকে অনুরোধ করেছেন। এরপর নেত্রী নাকি ওই নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার আমার জীবনে হয়তো জন প্রতিনিধি বা পৌরসভার মেয়র হিসেবে শেষ দিবস।’
কাদের মির্জা বলেন,‘সকালে এ কথা জানার পর আমি পৌরসভার দাপ্তরিক সব দস্তখত দিয়ে শেষ করেছি।নেত্রীর নির্দেশ পেলে দল এবং পৌরসভার পদ থেকে বিদায় নেব। নেত্রী ব্যস্ত মানুষ তিনি হয়তো সময় পাবেন না, তবে সঙ্গে যারা থাকেন তাদের কেউ মেসেজ দিলেও হবে।’
তিনি বলেন, ‘দল থেকে বিদায় নিলেও পৌরসভায় একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের অফিস করেছি। বহিষ্কারের পর সেখানে বাধা দিলে বা বসতে না দিলে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে গিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জয়গান গাইবো।’
দলের পদ হারানোর আশঙ্কায় থাকা ওবায়দুল কাদেরকে দোষারোপ করেছেন কাদের মির্জা।
কাদের মির্জা লাইভে এসে অভিযোগ করেন, কোম্পানিগঞ্জের চলমান অস্থিতিশীল পরিবেশের জন্য ওবায়দুল কাদেরই ‘দায়ী’।
কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি কেন? গত ৫ মাস কোম্পানীগঞ্জে অপরাজনীতির হোতারা অশান্তি সৃষ্টি করছে আপনি এখানের মন্ত্রী, একটা পাগলকে জিজ্ঞেস করলে সে বললে এজন্য ওবায়দুল কাদের দায়ী।এটা বলা অপরাধ হলে আমাকে বহিষ্কার করে দিন।’
তিনি অভিযোগ করেন, তার নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হলেও নোয়াখালীর নেতা হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখছেন না ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমি লোকজনকে কত শান্ত করে রাখব। আমার সাথে যত ওয়াদা করেছেন একটাও পালন করেননি ওবায়দুল কাদের।’
কাদের মির্জা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরকে আমি কিসের অপমান করেছি? তার সাথে দেখা করেছি, বললেন -শান্ত থাক। এর দুইদিন পর তার ভাগিনার নেতৃত্বে আমার ৯ জন ছেলেকে গুলি করা হল। কোনো বিচার পাইনি।’
কাদের মির্জা বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশে আপনি যাদের নমিনেশন দেন তারা কে কি করে তাদের সেই চেহারাটা কি আপনি দেখেছেন? যাদের কোনো অতীত নেই, তাদেরই নমিনেশন দেন আপনি।’
তিনি ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘কাদের সাহেব নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখুন, আপনার স্ত্রীকে বলুন তার চেহারাটা আয়নায় দেখতে, তাকে সামলান, তার লাগাম টেনে ধরুন। আমি যদি মিথ্যা কথা বলি নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে শাস্তি দিবেন আমি মাথা পেতে নেব’
এ সময় কোম্পানীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে নিজের ঘোষিত প্রার্থীদের তালিকা বাতিল ঘোষণা করেন কাদের মির্জা।
তিনি বলেন, ‘এ ঘোষণা দেবেন একমাত্র শেখ হাসিনা। তিনি যাদের মনোনয়ন দেবেন তারা যদি যোগ্য হয় তাহলে তাদের পক্ষে কাজ করবেন তিনি।’
এদিকে বহিষ্কার হলে পৌরসভার পরবর্তী উপ নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হয়ে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করবেন বলেও জানান আলোচিত এ মেয়র।
যদিও এর আগে স্থানীয় সরকারের আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।
কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি থেকে সরে যাব না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে যাব না। আমি যখন বলি আওয়ামী লীগের ৯০ভাগ রাজনীতিবিদ সাম্প্রদায়িক, হিন্দুদের মধ্যে ৮০ ভাগ সাম্প্রদায়িক। আমার এ কথায় অনেকে মনে কষ্ট পায়। আমি কাউকে ভয় করি না।’
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মিজানুর রহমান বাদলের গাড়িতে হামলা চালায়। এতে বাদলসহ সাবেক ছাত্রনেতা হাসিব আহসান আলাল আহত হন।
ঘটনার পর আলাল অভিযোগ করেন, দুর্বৃত্তরা বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার অনুসারী।
কাদের মির্জা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাদলকে আমি কেন মারব? নোয়াখালীর তথাকথিত এমপি একরাম চৌধুরী বাদলকে মেরে ফেলে আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে আমাকে এলাকা ছাড়ার ষড়যন্ত্র করেছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।