জুমবাংলা ডেস্ক: যশোরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় এ বছর আলুর ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। খবর ইউএনবি’র।
৪৫ দিনের ব্যবধানে দুই দফা শৈত্যপ্রবাহ, মধ্যরাতে অসময়ের গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ও তীব্র ঘন কুয়াশার কারণে আলু খেতে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
লোকসানের আশঙ্কায় অনেক চাষিই এখন অপরিপক্ব আলু তুলে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে যশোরের ৮ উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
চাষের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলু খেতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। তবে ফলনের শেষ মুহূর্তে তীব্র ঘন কুয়াশা ও দুই দফা মৃদু বৃষ্টির কারণে আলু খেত লেটব্লাইট রোগে নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
অধিকাংশ খেতের আলু গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে ও গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। এতে চাষিরা মারাত্মক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
তারা বলেছেন, ডিসেম্বরের শেষ সময়ে খেতে গাছের গোড়ায় যখন আলুর ফলন আসতে শুরু করে ঠিক তখনই যশোরাঞ্চলের ওপর দিয়ে শুরু হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কয়েকদিনেও আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় রোগের প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
প্রতিটি খেতের আলু গাছ শুকিয়ে হলুদ বর্ণ হতে থাকে, বলেন তারা।
এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে জমিতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করে কিছুটা প্রতিকার পেলেও দুই সপ্তাহ পর আবারও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। লেটব্লাইট রোগ ফের দেখা দেয়ায় অনেকে ভয়ে অপরিপক্ব আলু তুলে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্দ্র অবস্থায় লেটব্লাইট রোগ দেখা দেয় এবং যদি উপযুক্ত ছত্রাকনাশক ব্যবহার না করা হয় তবে প্রথমবার এ রোগ দেখা দেয়ার কয়েক দিনের মধ্যে এটি পুরো উদ্ভিদকে ধ্বংস করতে পারে।
কাণ্ডগুলো প্রায়শই নরম, পচা ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয় যা দ্রুত পাশের আলুগুলোকে দুর্গন্ধযুক্ত, পচার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
যশোর সদর উপজেলার নোঙরপুর মাঠের কয়েকজন কৃষক বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে স্প্রে করা হলেও কাজ হচ্ছে না। কৃষকদের জন্য বিষয়টি উদ্ভট লাগছে।
আলু চাষি হাসমত আলী বলেন, ‘এবছর ধার-দেনা করে দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। শুরুতে গাছও হয়েছে খুব ভালো। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে সেগুলো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’
‘আর ১৫ থেকে ২০ দিন পর এসব আলু তুলে বাজারে নিলে ফলন বেশি হত। কিন্তু আলুর পচন ধরার ভয়ে আমরা আর খেতে রাখতে চাচ্ছি না,’ বলেন তিনি।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এমদাত শেখ জানান, তারা বিষয়টি অবগত আছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আলু খেত পরিদর্শন করেছি। কিছু কিছু খেতে এ ধরনের সমস্যা আছে। তবে এ পরিস্থিতিতে আমরা আলু খেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।