লাইফস্টাইল ডেস্ক: অনেক ধাপ পেরিয়ে বলপেন এসেছে মানুষের হাতে। শুরুটা মিসরে, পাঁচ হাজার বছর আগে। নলখাগড়া কিংবা বাঁশের সরু কঞ্চিকে কলম হিসেবে ব্যবহার করা হতো তখন।
কঞ্চিগুলোর মাথা সুচালো করে কেটে নিত মমির দেশের লোকেরা। সেটির ডগায় তামার নিব লাগিয়ে নিয়েছিল তারা। তা কালির মধ্যে ডুবিয়ে লেখালেখির কাজ সারতেন মিসরীয়রা।
অন্যদিকে গ্রিসের বাসিন্দারা হাতির দাঁত ব্যবহার করতেন কলম হিসেবে। সেটিকে স্টাইলাস বলে ডাকতেন তারা।
কলম হিসেবে পাখির পালক ব্যবহার শুরু হয় পঞ্চম শতকে, বিশেষ করে রাজহাঁসের পালক। অন্যান্য কলমের মতো সেটির মাথাও চোখা করে নেওয়া হতো। কোথাও কোথাও পালকে যুক্ত হতো ব্রোঞ্জ। জুলিয়াস সিজার সে ধরনের একটি কলম ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়।
আধুনিক বলপেনের সঙ্গে মানুষের পরিচয় ঘটে ১৮৮৮ সালে, আমেরিকান জন লাউডের মাধ্যমে। কলমের মাথায় তিনি যুক্ত করেন গোল একটি বল, যা যে কোনো দিকে ঘুরতে পারে। এই কলমে একটি ছোট কুঠুরি ছিল। তাতে রাখা হতো কালি। বল ঘুরলে কালি বেরিয়ে আসত কাগজে।
এর প্রায় ৫০ বছর পর একই প্রযুক্তির বলপেন আনেন হাঙ্গেরির দুই ভাই লেডিসলাস বিরো ও জর্জ। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় তারা সেটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে পারেননি। যুদ্ধের কারণে দুজনেই পালিয়ে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনায়। এরপর বিক কোম্পানির কাছে সেই কলম বাজারজাত করার লাইসেন্স বিক্রি করেন দুই ভাই। অবশ্য সেই বলপেনে কিছু ত্রুটি ছিল। সেসব সমস্যা দূর করেন শিকাগোর নাবিক মিল্টন রেনল্ডস। তার হাত ধরেই পূর্ণতা পায় বলপেন। এ ধরনের কলম খুব অল্প সময়েই ছড়িয়ে পড়েছিল সারা বিশ্বে। তখন প্রতিটি বলপেন বিক্রি হতো ১২ ডলারে।
বলপেন বাজারে আসার আগে বিশ্বের নানা প্রান্তে বিভিন্ন রকম কলমের উদ্ভব হয়। খাগড়ার ভেতরে কালি ভরে কলম বানানো হতো কোথাও কোথাও। কিছু জায়গায় বন-খাগড়াকে ডুবিয়ে রাখা হতো কালিতে। সেটি কালি চুষে নিত। পরে তা কলম হিসেবে ব্যবহার করা যেত। বাঁশের কঞ্চির ভেতর কালি ভরেও কলম তৈরি হতো।
লেখার বা আঁকার কাজে কালিহীন কাঠির ব্যবহার শুরু হয়েছিল একেবারে আদিমকালে। লেখালেখির ইতিহাস ৬ হাজার বছরের পুরোনো। তবে কাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে গুহার গায়ে ছবি আঁকার শুরুটা বেশ আদিম। সেই কাঠিকে যদি কলম হিসেবে ধরা হয়, তাহলে বলা যায়, গুহার গায়ে ছবি আঁকার কাঠি থেকেই আজকের কলমের উৎপত্তি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।