স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সপ্তম ম্যাচের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। নিজেদের ৬টি ম্যাচেই হেরে যাওয়ায় তাদের সেমিফাইনালের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করছেন না বলে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আফগান অধিনায়ক গুলবদন নাইব।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমেন্স তাদের তুলনায় ভাল হলেও আফগানিস্তানের অধিনায়ক নিজেদেরকে বাংলাদেশের চেয়ে ‘দুর্বল দল’ বা ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে মানতে নারাজ বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।
ওই প্রতিবেদনে আরও তুলে ধরা হয়- সোমবার (২৪ জুন) বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের পরে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা বাকি থাকবে আফগানিস্তানের।
বিশ্বকাপের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া বাংলাদেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক তাওসিয়া ইসলাম বিবিসি বাংলার সাথে সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিনি মনে করেন বেশ কয়েকটি কারণে বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। আর সেসব কারণেই এবারের বিশ্বকাপের অন্যান্য ম্যাচের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে আলাদা এই ম্যাচ।
অন্তত একটি জয় চায় আফগানিস্তান
মিজ ইসলাম বলেন, ‘ছয়টি ম্যাচের সবকটিতে হারা আফগানদের আর হারানোর কিছু নেই। এবারের বিশ্বকাপে অন্তত একটি জয় চায় তারা। আর নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ভাল পারফর্ম করে দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। আর সেই জয়টা যে তারা বাংলাদেশের বিপক্ষেই তুলে নিতে চায়, সেবিষয়টিও বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথেই সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন আফগান অধিনায়ক।’
মিজ. ইসলাম মনে করেন আফগানদের এই মরীয়া মানসিকতা বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের প্রধান অনুপ্রেরণা হতে পারে।
একই মাঠে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ আফগানদের
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের ভেন্যু সাউদাম্পটনের রোজ বোল স্টেডিয়ামে ২২শে জুন ভারতের বিপক্ষে খেলেছে আফগানিস্তান। একদিনের ব্যবধানে আবার একই মাঠে নামছে তারা।
মিজ. ইসলাম জানান, ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচটি যেই পিচে হয়েছে, সে পিচেই হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচও।
এবারের আসরে ওভালের যেই পিচে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ হয়েছিল, বাংলাদেশ – নিউজিল্যান্ড ম্যাচটিও হয়েছিল একই পিচে। কিন্তু ঐ দুই ম্যাচের মধ্যে তিনদিনের ব্যবধান ছিল, বলেন মিজ. তাওসিয়া।
তার মতে, একদিনের ব্যবধানে একই পিচে খেলা হলে ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচের মতই দারুণ স্পিন সহায়ক উইকেট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
কয়েকদিন ধরে সাউদাম্পটনে থাকার কারণে এবং এই মাঠে এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলায় আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়ানো বা মাঠের সাথে পরিচিতির হিসেবে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের চেয়ে আফগানরা কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন বলে মনে করেন মিজ. ইসলাম।
স্পিনারদের ম্যাচ!
ইংল্যান্ডের আবহাওয়া অনুযায়ী তাদের পিচ তৈরির ধরণের হিসেব অথবা এবারের বিশ্বকাপের দলগুলোর বোলিংয়ের পরিসংখ্যানের হিসেব – যে কোনো ভাবে বিবেচনা করলে সহজেই বোঝা যায় যে ঐ কন্ডিশনে একটি দলের বোলিংয়ের মূল অস্ত্র পেসাররা।
তবে মিজ. ইসলাম মনে করেন, বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে এই ধারার বিপরীত দেখা যেতে পারে।
ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচে আফগান স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কারণে খুব একটা বেশি রান তুলতে পারেনি ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ।
আর ঐ পিচেই একদিনের ব্যবধানে ম্যাচ হওয়ায় উইকেট আরো বেশি স্পিনারদের সহায়তা করবে বলে মনে করেন মিজ .ইসলাম।
তিনি বলেন, এই উইকেটে যত বেশি সময় খেলা হবে, পিচ ততই স্পিন সহায়ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কাজেই দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করা দল উইকেট থেকে বেশি টার্ন পেতে পারে।
তবে ম্যাচের দিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, প্রায় সারাদিনই আকাশ মেঘলা থাকতে পারে এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও থাকবে বেশি। সেই হিসেবে স্পিনাররা যথেষ্ট টার্ন না’ও পেতে পারে।
বাংলাদেশ দলে ইনজুরি
টুর্নামেন্টের প্রথম কয়েকটি ম্যাচে দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে কোনো সমস্যার কথা শোনা না গেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
এ ছাড়া রোববার অনুশীলনের সময় মেহেদি হাসান মিরাজও চোট পান বলে খবর পাওয়া যায়।
মিজ. ইসলাম জানান, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে অফস্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন একাদশে আসতে পারেন বলে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডস। আর কিছুটা আঘাত পাওয়া মিরাজও খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।