জুমবাংলা ডেস্ক : খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ত দেখতে বয়সের চাইতেও বেশি বৃদ্ধ লাগতে পারে।
কারণ যা খাওয়া হয় সেটার প্রভাব ত্বকেও পড়ে।
‘আমেরিকান অ্যাকাডে অফ ডার্মাটোলজি’র সদস্য ডা. এরিয়েল ওস্ট্যাড এই বিষয়ে বলেন, “ধরা যাক কফি পানের বিষয়টা। কয়েক ধরনের কফি আছে যা ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। যে কারণে দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে মুখে।”
এছাড়া অ্যালকোহল, মাংস বা ভাজা খাবারও ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে পারে।
কফি
ক্যাফেইনের বড় উৎস হল কফি। এর সঙ্গে মেশানো চিনি- দুইয়ে মিলে তৈরি হয় পানিশূন্যতা। সেখান থেকে শুষ্ক ত্বক।
শুষ্ক ত্বকের দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে। তাই পানিশূন্যতা রোধে কফির সাথে চিনি না মেশাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। সবচেয়ে ভালো হয় চিনি দুধ ছাড়া সাধারণ কফি পান করতে পারলে।
মিষ্টি পানীয়
বয়সের ছাপ ফেলতে চিনি দায়ী। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংকস, মিষ্টান্ন ‘গ্লাইকেশন’ প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে।
ডা. ওস্ট্যাড ব্যাখ্যা করেন, “যখন অতিরিক্ত চিনি দেহে বিপাক হয় না তখন বাড়তি চিনির কণা প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়। সমন্বিত এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘গ্লাইকেশন’ পদ্ধতি, আর এর থেকে উপজাত হিসেবে তৈরি হয় ‘এজিইস’, এটা ত্বকের কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত করে।
চিনি একেবারে বাদ দিতে হবে না। তবে পরিমাণ কমাতে যা করা যেতে পারে-
কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকসের পরিবর্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
কমাতে হবে মিষ্টি, ক্যান্ডি, চকলেট ও কেক ধরনের খাবার।
স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক মিষ্টি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে, এক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যায় নানান রকম ফল।
অ্যালকোহল
শারীরিক নানান সমস্যা তৈরি করা ছাড়াও মুখে বয়সের ছাপ বেশি ফেলে মদ্যপান করলে। তাই এটা একেবারেই বাদ দেওয়া উচিত।
লবণাক্ত, ভাজা ও ঝাল মুখোরচক খাবার
‘নিউট্রিয়েন্টস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত চীনের ইউনান প্রদেশে অবস্থিত ‘লাইভস্টক প্রোডাক্ট প্রোসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার’য়ের গবেষণার ফলাফল বলে- বয়সের ছাপ ছাড়াও লবণ দেওয়া ঝাল-ভাজা মুখরোচক খাবার দেহে নানান বাজে প্রভাব রাখে।
তাই যখন তখন ঝাল খাবার খাওয়া ইচ্ছে কমাতে হবে। পাশাপাশি দৈনিক লবণ খাওয়ার পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে ২৩০০ মি.গ্রাম অর্থাৎ প্রায় এক চা-চামচে। লবণের মাত্রা কমাতে-
চিপস খাওয়ার পরিবর্তে লবণ ছাড়া বাদাম খেতে হবে।
সসেজ ছাড়া বেছে নিতে হবে টাটকা, হিমায়িত বা টিনজাত সবজি।
রান্নায় ব্যবহার করতে হবে টাটকা বা হিমায়িত চর্বিহীন মাংস ও সামুদ্রিক খাবার।
পোড়া কালো মাংস
বার্গারের মাংসের অংশটা বা বারবিকিউ করলে মাংস পোড়া কালচেভাব হয়। যাকে বলে ‘চার্ড মিট’। এতে প্রদাহ তৈরি করে এরকম উপাদান ‘হইড্রোকার্বোন্স’ থাকে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট’।
প্রদাহের কারণে কোলাজেন ভেঙে যায়।
তাই বলে বার্বিকিউ করা মাংস খাওয়া বাদ দিতে হবে না। তবে পোড়া মাংসের কালচে অংশটুকু কাচিয়ে ফেলে দিয়ে উপভোগ করতে হবে।
লাল মাংস
চর্বিবহুল লাল মাংস যেমন- গরু, খাসি, ছাগর বা ভেড়ার মাংস ফ্রি র্যাডিকেলস তৈরি করে। এসব অস্থির কণার কারণে কোষের ক্ষতি হয়। যার প্রভাব পড়ে ত্বকে।
এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে লাল মাংস খাওয়া কমানোর পাশাপাশি ‘অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন, ডা. ওস্ট্যাড।
ট্রান্স ফ্যাট
এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল থেকে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, পাশাপাশি প্রদাহ বাড়িয়ে ত্বকেও ফেলে বাজে প্রভাব। আর এটা আসে ট্রান্স ফ্যাট থেকে।
তাই যে কোনো প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে ‘ট্রান্স ফ্যাট’ শূন্য কিনা উপাদানের তালিকা পড়ে বুঝে নিতে হবে। এছাড়া ডুবো তেলে ভাজা ও বেইক করা খাবার, কফিতে ব্যবহৃত ক্রিম, মাইক্রোওয়েভে তৈরি করা যায় এমন প্যাকেটজাত পপকর্ন, সালাদের জন্য বাজারে পাওয়া যায় এমন সালাদ মিক্সার, বিস্কুট ইত্যাদি খাওয়া এড়াতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।