আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে থাবা বসিয়ে আছে করোনাভাইরাস। অদৃশ্য এই ভাইরাসের দাপটে বেসামাল অবস্থা পৃথিবীর প্রায় সব দেশেরই। এই অবস্থায় করোনার উৎপত্তিস্থল চীনে ফের দ্বিতীয় ধাক্কায় মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। অনেকেই বলছে, এটি নাকি করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা। যে কারণে যথেষ্ট উদ্বেগে রয়েছে শি জিনপিং প্রশাসন।
যে কোনও ভাইরাস বা রোগের দ্বিতীয় সংক্রমণ বলতে বোঝায়, হঠাৎ করে কোনও রোগ নিমূর্ল হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় তা আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। যার ফলে নতুন করে আবার অসংখ্য মানুষের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। একেই বলে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা বা দ্বিতীয় ওয়েভ (ঢেউ)।
আর এই দ্বিতীয় দফায় ফের করোনা সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে চীনের মধ্যে। আর এর কারণ হিসেবে, বিশেষজ্ঞদের দাবি চীনাদের অদ্ভুত জীবনযাপন এবং তাদের খাদ্যভাস।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে চিনের উহান মার্কেট থেকেই প্রথম ছড়িয়ে পড়েছিল এই করোনাভাইরাস। তারপর দীর্ঘ কয়েক মাস সম্পূর্ণ ললকডাউনে থাকার পর ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে চীন। খুলে গেছে চীনের দোকান, বাজার, হোটেল, রেস্তোরাঁ।
যার ফলে আবার বেড়েছ চীনাদের সামুদ্রিক খাবারের প্রতি ক্ষুধা। দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনের পর রেস্তরাঁগুলি খুলতেই রমরমিয়ে বেড়েছে সামুদ্রিক স্যালমন মাছসহ কুকুর, ভেড়ার মাংস খাওয়ার প্রবণতা। আর যা চীনে দ্বিতীয় বার করোনা সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কাকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলছে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। তবে দেশে দ্বিতীয় ধাক্কায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর চীনা সরকার। বেইজিং’র বাজার গুলিতে স্যালমন মাছ বিক্রি এবং আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সরকারী নির্দেশ অগ্রাহ্য করে যে সমস্ত রেস্তোরাঁ হোটেল গুলি আবার সামুদ্রিক খাবার সহ বিভিন্ন পশুর মাংস বিক্রি করছে সেইসব হোটেল গুলিকে চিহ্নিত করছে চীনা প্রশাসন। তবে চীনের বিভিন্ন মার্কেটে এই মুহুর্তে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সামুদ্রিক খাবার বিক্রি করা।
এই বিষয়ে চীনের এক সরকারি কর্মী জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের পর থেকেই তিনি সকল ধরনের সামুদ্রিক খাবার বর্জন করেছেন এবং বাড়িতে বিভিন্ন পশুর মাংস মজুত রাখাও বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়াও বেইজিংয়ের বিভিন্ন নামীদামী রেস্তোরাঁগুলিও স্যালমন মাছ সহ বিফ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ফের করোনা আতঙ্কের জেরে। শুধু তাই নয়, রেস্তোরাঁতেও খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন চীনের অধিকাংশ নাগরিক।
অবশ্য এর জেরে প্রবল মন্দার মুখে চীনের অর্থনীতি। রাশিয়া, ভিয়েতনাম পেরুসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪.৪৪মিলিয়ন টন এই সি-ফুড আমদানি করে চীন। এর ফলে চীনের মোট খরচ হয় ১০৬ বিলিয়ন ডলার। শুধু তাই নয়, করোনার কারনে চলতি বছর মাত্র ৩ শতাংশ সি-ফুড বাইরের দেশে রফতানি করেছে চীন।
তবে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বেইজিংয়ের ২৫০জন সাধারণ মানুষ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে দ্বিতীয় ধাক্কার সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একেতেই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি সহ নানা ইস্যুতে রাতে ঘুম ছুটেছে চীনের। করোনা মহামারীর জন্য চীনকেই প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ি করে আসছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। যার ফলে একদিকে ক্রমশ কোণঠাসা অন্যদিকে দ্বিতীয় ওয়েভের আতঙ্কে ব্যাপক উদ্বেগে ভুগতে শুরু করেছে চীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।