মুফতি জাকারিয়া হারুন : ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে বহু মানুষ। তাই জীবন বাঁচাতে সবসময় সতর্কতা কাম্য। ইসলামের নির্দেশনা মেনে চললে সুরক্ষিত হবে যাতায়াত। মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে। আমাদের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে আসবে– ইনশাআল্লাহ।
দোয়াও একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া ইবাদতের মূল। দোয়া ছাড়া ইবাদত অপূর্ণ থাকে। যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল (সা.) আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া শিখিয়েছেন।
হজরত জুবায়ের ইবনে মুতঈম (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, হে জুবায়ের ! তুমি কি উহা পছন্দ কর যে, যখন তুমি সফরে যাও তখন তোমার অবস্থা তোমার সব সঙ্গীর অপেক্ষা উত্তম ও তোমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা বেশি হয়?
আমি বলিলাম, জি হ্যাঁ। আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক ! রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এই পাঁচটি সুরা পাঠ করবে–
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ – إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ – قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ । সুরাগুলো হলো ১. সুরা কাফিরুন ২. সুরা নাসর ৩. ইখলাস ৪. সুরা ফালাক ৫. সুরা নাস।
প্রত্যেক সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম পড়বে। সবশেষে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়বে । এইভাবে পাঁচ সুরায় ও ছয়বার বিসমিল্লাহ হবে।
হজরত জুবায়ের (রা.) বলেন, আমি ধনী হওয়া সত্ত্বেও আগে যখন সফরে যেতাম তখন আমার অবস্থা সর্বাপেক্ষা ভগ্নাবস্থা ও আমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা কম হতো। কিন্তু রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে এই সুরাগুলো শিক্ষা দিলেন তখন থেকে আমি এ সুরাগুলো পাঠ করতে আরম্ভ করলাম, আর তখন থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সম্পূর্ণ সফরে আমার অবস্থা সর্বাপেক্ষা উত্তম হতে লাগল। আমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা বেশি হতে লাগল।
بسم الله الرحمن الرحيم سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ (উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনকলিবুন।)
অর্থ: মহান আল্লাহর পবিত্রতা যিনি একে (বাহন) আমাদের অধীন করে দিয়েছেন, অথচ আমরা একে অধীন করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তনকারী।
সচেতনতা বৃদ্ধি
সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতন হতে হবে। চালক, যাত্রী, পথচারী ও সড়ক নিরাপত্তার দায়িত্বশীল সবাই নিজেদের দায়িত্বে সজাগ ও সচেতন হলেই দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। চালকদের উদাসীনতা, ট্রাফিক আইন না মানা, দ্রুতগতিতে যানবাহন চালানো, ওভারটেক করা; অন্যদিকে পথচারীর মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হওয়া, যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ইত্যাদি কারণে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
ইসলাম সবসময়ই দায়িত্ব সচেতন হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’(বুখারি : ২৫৫৮)।
অন্য হাদিসে আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত- রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, খবরদার! তোমরা রাস্তায় বসে থেকে রাস্তা দখল করবে না। একান্ত যদি বসতেই হয়, তা হলে রাস্তার হক আদায় করবে। (বুখারি : ২২৯৭)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।