সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিমের জুড়ি নেই। পুষ্টিতে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক খাবার এটি। প্রোটিন ও পুষ্টি উপাদানের পাওয়ার হাউজ হিসেবে পরিচিত এ খাবারটি অত্যন্ত উপাদেয়। বলা হয়ে থাকে, সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।
তবে বর্তমান বাজারে ডিমের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে দৈনন্দিন প্রোটিনের এ সহজলভ্য উৎস কেনার সামর্থ্য নাগালের বাইরে চলে গেছে অনেকেরই।
শরীর গঠন ও শরীরের ক্ষয়পূরণের জন্য প্রোটিনের কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও শরীরের টিস্যু পুনর্গঠন করে প্রোটিন। তাই আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান হচ্ছে প্রোটিন।
মাছ, মাংস, ডিমের মতো আমিষ জাতীয় খাবারকে প্রোটিনের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হলেও নিরামিষ খাবারে যে প্রোটিন নেই, তা কিন্তু নয়।
অনেকেই নিরামিষাসী জীবনযাপন করে থাকেন। তাদের কিন্তু প্রোটিনের অভাব দেখা দেয় না। এর মূল কারণ, নিরামিষ খাবারেও পাওয়া যায় পর্যাপ্ত প্রোটিন। শুধু বেছে নিতে হবে কোন কোন নিরামিষ খাবারগুলো খাবেন আপনি।
চলুন আজকে এমন পাঁচটি নিরামিষ খাবার সম্পর্কে জেনে নেই যাতে ডিমের চেয়েও বেশি প্রোটিন পাবেন বিনা চিন্তায়। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এ পাঁচটি নিরামিষ খাবার যোগ করলে আপনাকে আপনার ডিম কেনার চিন্তাও কমবে।
সবুজ শাক-সবজি
যদিও বর্তমানে বাজারে শাকসবজির দামও বেশি। তবে তা এখনও ডিমের দামকে টেক্কা দিতে পারেনি। তাই রোজকার প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে বেছে নিতে পারেন প্রোটিনসমৃদ্ধ শাকসবজি।
বিভিন্ন সবুজ শাক-সবজিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন। মটরশুঁটি, কড়াইশুঁটি, ব্রকলি, শিম, পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো আরও অনেক সবুজ শাক-সবজি আছে যাতে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় প্রোটিন।
এসব সবুজ শাক-সবজি রোজ খেলে শুধু আপনার প্রোটিনের চাহিদা মিটবে তা-ই নয়, বরং এতে আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিন ও ফাইবারের চাহিদাও মিটবে।
বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার
বাদাম খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ বোধহয় নেই বললেই চলে। তবে পছন্দের এ খাবারটি শুধু যে খেতে মজার তা কিন্তু নয়, এতে রয়েছে খাদ্যের মৌলিক উপাদান প্রোটিন।
বাদামের সঙ্গে এ তালিকায় যুক্ত হবে বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার। এগুলো প্রোটিনের ভালো উৎস হিসেবেও কাজ করে। তবে এ ধরণের খাবার খাওয়ায় সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ বেশি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, মুটিয়ে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিদিনই অল্প পরিমাণে কিছু বাদাম খান। তা হতে পারে চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম, আখরোট ইত্যাদি। আবার বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার, যেমন-কুমড়ার বীজ, বিভিন্ন ডালের অঙ্কুর, শিমের বীজ, তিল ইত্যাদিতেও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন।
ডাল
এক কাপ ডালে প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ১৬ থেকে ১৮ গ্রাম। বিভিন্ন ডালের পাশাপাশি ছোলায়ও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণের প্রোটিন।
তাই রোজকার প্রোটিনের প্রয়োজন মেটাতে খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন বিভিন্ন ডাল বা শস্যদানা।
সম্প্রতি কিনোয়াও জনপ্রিয় একটি খাবার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, যা প্রোটিনের একটি বড় উৎস। পাশাপাশি এতে পাওয়া যায় প্রায় ১৮ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড।
তবে খেয়াল রাখবেন, বিভিন্ন গবেষণা বলে, ডাল বা শস্যদানা হজমে কিছুটা সময় লাগে। তবে সব ধরনের ডালই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন পুষ্টিবিদরা।
পনির
যারা নিরামিষাসী বা ভেগান তাদের কাছে প্রোটিনের উৎস হিসেবে পনির অত্যন্ত উপাদেয় ও জনপ্রিয় একটি খাবার।
এক কাপ পনিরে প্রায় ১২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে খাবার তালিকায় যুক্ত হতে পারে পনির।
চাইলে পনিরের বিভিন্ন রেসিপি চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আবার এমনিতেই খেতে পারেন হালকা নোনতা নরম তুলতুলে এ খাবারটি।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
সুষম খাবার হিসেবে বেশ নামডাক রয়েছে যার, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং দুগ্ধ মহারাজ। ক্যালসিয়াম থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের পুষ্টির বড় উৎস এ তরল। আর দুধ থেকে যেসব খাবার তৈরি করা হয়, সেগুলোও যথেষ্ট পুষ্টিসমৃদ্ধ।
এত গুণের পাশাপাশি প্রোটিনের উৎস হিসেবেও দুধের নামডাক রয়েছে। এক কাপ গরুর দুধে প্রায় ৩.৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
তাই যদি নিয়ম করে প্রোটিন খেতে যান, দিনে বা রাতে পান করতে পারেন এক কাপ দুধ। এতে সহজেই আপনার প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।