জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুরের শ্রীপুরে দুই লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় স্বামী, শাশুড়ি ও দুই মামা শ্বশুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূ মুন্নি আক্তারের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর পরই গৃহবধূ বাদী হয়ে স্বামীসহ তার তিন সহযোগীকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- স্বামী সাঈম আহমেদ (২৬), শাশুড়ি জাহানারা বেগম (৪৫), মামা শ্বশুর আতাবুর রহমান (৪২) ও হাবিবুর রহমান (৩৮)।
এ ঘটনায় পুলিশ মামা শ্বশুর আতাবুর রহমানকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
গত রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে।
শ্রীপুর থানার এসআই এখলাছ উদ্দিন গৃহবধূ মুন্নির বরাত দিয়ে জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের সালেহ আহমেদের ছেলে সাঈম আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই নারীর।
দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে মোয়াজ্জেম নামে আড়াই বছরের ছেলেসন্তানও রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে ওই গৃহবধূ নয়নপুর এলাকার অটো স্পিনিং মিলে শ্রমিকের চাকরি করছিলেন। তার বেতনের সম্পূর্ণ টাকা স্বামী সাঈম আহমেদের হাতে তুলে দিতে হতো। ছেলে মোয়াজ্জেম জন্ম নেয়ার মাসখানেক পর থেকে স্বামী সাঈম পরিবারের লোকজনের প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। গৃহবধূ বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে অপারগতা জানালে স্বামী, শাশুড়ি ও দুই মামা শ্বশুর প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি স্বামী আবারও বাবার বাড়ি থেকে সেই দুই লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য তাকে চাপ দেয়। গৃহবধূ বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে পারবে না বলে স্বামীকে জানায়।
পরে স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ঘরে আটকে রাখে। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি স্বামী বাড়িতে না থাকায় কৌশলে ছেলে মোয়াজ্জেমকে নিয়ে ওই গৃহবধূ শিমুলতলা গ্রামের বাবার বাড়ি চলে যায়।
সেখানে বাবাকে ঘটনা খুলে বলার পর মেয়ে ও একমাত্র নাতির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
শ্রীপুর থানার এসআই এখলাছ উদ্দিন আরও বলেন, মামলা হওয়ার পর ওই দিন রাতেই একজন আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।